নয়াদিল্লি: ফি বছর শীত আসে যদিও। তবে এ বার তীব্রতা সত্যই বেশি। রাজধানী দিল্লি তো বটেই বঙ্গেই ঠান্ডার দাপট অনুভূত হয়েছে ভালই। সে ক্ষেত্রে ভূস্বর্গের পরিস্থিতি অনুমেয়। এ বার সেখানে তুষারধস নামল (Sonmarg Avalanche)। সোনমার্গে পাহাড়ের ঢালে গাছগাছালি বেয়ে নেমে এল ধস। মেঘের আকারে নেমে আসে সেই তুষার কার্যতই ঢেকে দিল গোটা এলাকা। তাতে প্রাণ হারালেন এক শ্রমিক (Avalanche in Jammu Kashmir)। ক্যামেরাবন্দি হয়েছে তুষারধসের সেই দৃশ্য, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল নেট দুনিয়ায় (Viral Video)।
সোনমার্গে পাহাড়ের ঢালে গাছগাছালি বেয়ে নেমে এল ধস
জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যবর্তী গন্দেরওয়াল জেলার ঘটনা। সোনমার্গের বলতাল এলাকায় বৃহস্পতিবার তুষারধস নামে। ওই এলাকায় এক জায়গায় নির্মাণকার্য চলছিল। তুষারধসের পর নির্মাণকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, তাদের দুই কর্মীর কোনও খোঁজ মিলছে না। তাতে শুরু হয় উদ্ধারকার্য। তাতেই এক জনের দেহ উদ্ধার হয়। নিহত ব্যক্তিকে সন্দীপ নামে শনাক্ত করা গিয়েছে। তিনি কিশতওয়ারের বাসিন্দা।
ওই নির্মাণ সংস্থার আরও এক কর্মী, যিনি তুষারধসে চাপা পড়েছেন বলে অনুমান করা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত তাঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে এখনও উদ্ধারকার্য চলছে। পেঁজা তুলোর মতো তুষারের নিচে তিনি চাপা পড়েছে বলে অনুমান। তা সরিয়ে তাঁকে তুলে আনার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: PM's Security Details: ছাদে স্নাইপার, পাশে SPG, প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষায় দুর্ভেদ্য বলয়
এ দিন তুষারধসের জেরে সিন্ধ নদীর স্বাভাবিক স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়। সংলগ্ন রাস্তাঘাটেও ব্যাহত হয় যান চলাচল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় সোনমার্গের দুই জায়গায় এ দিন তুষারধস নেমেছে। বলতালে তাতে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা সামনে এলেও, অন্যটির ক্ষেত্রে হতাহতের কোনও খবর নেই।
বুধবার রাতে নতুন করে তুষারপাত হয়েছে কাশ্মীরে। তাতে বরফের স্তর আরও বেড়ে গিয়েছে। তুষারপাতের ফলে কাশ্মীরের তাপমাত্রাও একধাক্কায় অনেকটাি নেমে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার শ্রীনগরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রয়েছে। উপত্যকার প্রবেশদ্বার কাজিগুণ্ডে তাপমাত্রা নেমে ১.৬ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। পর্যটকদের ভিড় যে সমস্ত জায়গায়, যেখান থেকে প্রতি বছর অমরনাথ যাত্রা শুরু হয়, সেই পগলগাঁওয়ের তাপমাত্রা -০.৩ ডিগ্রি থেকে -৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। গুলমার্গের তাপমাত্রাও -৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে রয়েছে।
বুধবার রাতে নতুন করে তুষারপাত হয়েছে কাশ্মীরে
এই মুহূর্তে 'চিল্লাই কালান'-এর কবলে রয়েছে কাশ্মীর, যার মাধ্যমে শীতকালের ৪০টি তীব্র ঠান্ডার দিনকে বোঝায়। এই সময়ে উপত্যকায় সবচেয়ে বেশি তুষারপাত হয় এবং তা ঘন ঘন হয়। ২১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়কালকে 'চিল্লাই কালান' হিসেবে ধরা হয়। তার পর অন্তত ২০ দিন ধরে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়, যা 'চিল্লাই খুর্দ' নামে পরিচিত, অর্থাৎ ক্ষুদ্র ঠান্ডা। তার পর আসে ১০ দিন ব্যাপী 'চিল্লাই বাচ্চা', শিশুবৎ ঠান্ডা।