রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় রোজই উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের কাছে সোনম ও রাজ কুশওয়ার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলেই খবর। তাদের পরিকল্পনা, যোগাযোগ, খুনের মোটিভ, পুরোটাই স্পষ্ট। কিন্তু এখানেই মনে হয় রহস্যের শেষ নয়। প্রতিদিনই আসছে  নতুন মোড়। পুরো ঘটনায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে । খুনের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সোনম রঘুবংশীর ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর নাম উঠে এসেছে তদন্তে। তাঁর নাম  'অলকা'বলে জানা গিয়েছে। 

সোনমের পরিবার এবং রাজা রঘুবংশীর পরিবার, উভয় পক্ষই দাবি করেছে তদন্ত হোক পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে,যাতে সব দোষীদের নাম সামনে আসে। পরিবারদ্বয়ের দাবি, সোনমের সমস্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং তার সঙ্গে যাঁরা কাজ করতেন, তাঁদের সকলকে জেরা করা হোক। বিশেষত যেসব মেয়েদের সঙ্গে সোনমের ওঠা-বসা, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।  সোনমের পরিবারের আশঙ্কা, রাজ কুশওয়াই শুধু নয়,  আরও অনেক নাম ও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।

ইতিমধ্যেই  'অলকা' নামে একজনের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে, যিনি নাকি সোনমের ঘনিষ্ঠ। তিনিও কি সবটাই জানতেন? আরও যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে প্রশ্ন উঠছে, অলকা নামের এই মেয়েটি কি  মেয়ের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে, তাকে সোনমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে মনে করা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠছে অলকা কি সোনমের কেবলই বন্ধু ? নাকি পার্টনার ইন ক্রাইম ? সেও কি এই অপরাধে একজন বিশ্বাসী বা অংশগ্রহণকারী ছিল? পুলিশ সূত্রের খবর,এবার রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় 'অলকা' নামে ওই মহিলার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজা রঘুবংশীর পরিবার এই গভীর বন্ধুত্বকে সন্দেহের চোখেই দেখছে। পুলিশের কাছে সোনমের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দাবি , অলকা সহ সোনমের সমস্ত ঘনিষ্ঠ মহিলাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তাতে হয়ত এমন কোনও সত্য বেরিয়ে আসবে, যা কল্পনাতীত। 

গত মে মাসে রাজা ও সোনমের বিয়ে হয়। তারপর তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় যান মেঘালয়ে। সেখানে কয়েকদিন পর যুগলে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবার পুলিশে অভিযোগ করে। মেঘালয় পুলিশের লাগাতার তল্লাশির পর উদ্ধার হয় রাজা রঘুবংশীর দেহ। কিন্তু সোনমের খোঁজ মেলে তার বেশ কয়েকদিন পর। রাজ-হত্যার ১৭ দিন পর, সোনম নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ততক্ষণে পুলিশের কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ একত্রিত হয়েছে। সোনমের পর তার সঙ্গে অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড কেবল ইনদৌরেই নয়, সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে  বহু ভ্রমণপিপাসুর মনেও মেঘালয় নিয়ে ভয়ের সঞ্চার হয়। তবে এখন অপরাধের পর্দাফাঁস হতে পুরো ঘটনাটাই সকলের কাছে পরিষ্কার।  

দুই পরিবারের সন্দেহ, সোনম একা এই অপরাধ করেননি। অলকার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ এখন এই মামলাটিকে কেবল প্রেমের সম্পর্ক বা ব্যক্তিগত শত্রুতা হিসেবেই দেখছে না, বরং এর মধ্যে কোনও গভীর ষড়যন্ত্রের আশঙ্কাও করছে। আগামী দিনে, অলকা এবং সোনমের মধ্যে বন্ধুত্বটি ঠইক কেমন, তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।