কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের সভা ঘিরে ফের উত্তপ্ত ভাঙড়। বোমাবাজির অভিযোগে বৃহস্পতিবারও রাস্তা অবরোধ করা হয়!
পাওয়ার গ্রিডের আঁচে এখনও ফুটছে ভাঙড়। আন্দোলনকারীদের সভা ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বেলঘরিয়া থেকে চিনার পার্ক পর্যন্ত। উঠল পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমনের চেষ্টার অভিযোগ। দিনভর টানটান উত্তেজনার মধ্যে ভাঙড়ে সমাবেশ করল আন্দোলনকারীরা। পাল্টা রণকৌশল ঠিক করতে এককাট্টা হল তৃণমূলের যুযুধান সব শিবির!
মাছিভাঙা গ্রামের তপোবন গ্রামে এদিন সভার ডাক দেয় ‘জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’। অভিযোগ, তার আগে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে পদ্মপুকুর এলাকায় বোমাবাজি করে তৃণমূল। পাল্টা কোমর বাঁধে আন্দোলনকারীরাও।
সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ মাছিভাঙা, খামারআইট পাওয়ার গ্রিডের সামনে রাস্তায় ইট ও গাছের গুড়ি ফেলে শুরু হয় অবরোধ। এরমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভাঙড়ে জমায়েত আসা শুরু হয়। অশান্তি মোকাবিলায় তৎপর ছিল পুলিশও। বেলঘড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন একটি আবাসন থেকে সিপিআইএমএল রেডস্টারের এক নেতা-সহ ১২ জনকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্রে দাবি, এদের মধ্যে ১১ জনই অসমের পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত! ভাঙড়ের এক আন্দোলনকারী বলেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনেও তো বহিরাগতরা সমর্থন করেছিল। তাদের কি গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাহলে অসমের ১১ জনকে কেন গ্রেফতার করা হল। চিনার পার্ক থেকেও প্রায় ৭০ জনকে আটক করে পুলিশ। যা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।
এই পরিস্থিতিতে এদিন দুপুরে ভাঙড়ে সভা করেন আন্দোলনকারীরা। উপস্থিত ছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী-সহ একাধিক দল ও সংগঠনের নেতৃত্ব। প্রত্যেকেই প্রকল্পের বিরোধিতায় সুর চড়ান।
তৃণমূলের অবশ্য দাবি, বহিরাগতরা এসে অশান্তি পাকাচ্ছে ভাঙড়ে। উসকানি দিচ্ছে বিরোধীরা। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভাঙড়ের মানুষ শান্তিতে থাকুক, সরকার পাশে আছে। বাইরের লোক যাবে কেন? তাদের ব্যবহার করা হবে কেন? এটা ঠিক নয়। ঘাঁটি গেড়ে বসে পড়লাম, মনে হচ্ছে একটা দেশ। সরকারবিরোধী আন্দোলনে গতি আনার চেষ্টাকে নিন্দা করি। অলীক বাবুরা অলীক স্বপ্ন দেখুক। জমি নেওয়ার সময় এরা কোথায় লুকিয়ে ছিল তা তো জানি না।
আন্দোলনকারীরা সবচেয়ে বেশি যার বিরুদ্ধে আঙুল তুলছেন, সেই আরাবুল ইসলাম এদিনও প্রকল্পের পক্ষে সুর চড়িয়েছেন। আরাবুল ইসলাম বলেন, শান্তিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তবে পাওয়ার গ্রিড হবেই। আন্দোলনে নেই কোনও কৃষক। ক্ষতিপূরণের পরে কীসের ক্ষোভ।
ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড নিয়ে এই চাপানউতোরেরক মধ্যেই রবিবার খামারআইটে পাল্টা সভা করবে তৃণমূল।