হাওড়া: পুলিশের হাতে সূত্র ছিল, দুটো। বাড়ির পাশের রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ। আর মৃতার পাঁচ বছরের শিশুকন্যার বয়ান।
পুলিশের দাবি, সিসিটিভির ছবি ততটা স্পষ্ট না থাকায় প্রধান ভরসা ছিল শিশুকন্যার বয়ান। সেই বয়ানের ভিত্তিতেই সোমবার রাতে লিলুয়ার ভাটনগর থেকে দীপক সিংহ নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বালির ১৫১ জিটি রোডের এই বহুতলে দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন রাখী সিংহ ও মনোজ সিংহ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ব্যবসার কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন মনোজ। টিউশন পড়তে গিয়েছিল বড় মেয়ে। পাঁচ বছরের ছোট মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন রাখি।
প্রতিবেশীদের দাবি, বিকেল ৪টে নাগাদ, ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে দরজায় ধাক্কা দেওয়ার আওয়াজ আসে। বাইরে থেকে বন্ধ থাকা দরজা খুলতেই দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন রাখি। পাশে কাঁদছে পাঁচ বছরের মেয়ে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই রাখির মৃত্যু হয়।
কিন্তু কে খুন করল রাখিকে? মৃতার ছোট মেয়ের বয়ানে সূত্র পায় পুলিশ। সে জানায়, পিন্টু আঙ্কেল এসেছিল, চা খায় তারপর মাকে মারে। এরপরই শুরু হয় ‘পিন্টু আঙ্কলের’ খোঁজ। পুলিশের দাবি, বাড়ির পাশের রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় জিনস ও গেঞ্জি পরা এক যুবককে সাইকেলে করে চলে যেতে। কিন্তু ছবি ততটা স্পষ্ট ছিল না। এরপরই ‘পিন্টু আঙ্কলের’ সূত্র ধরে শুরু হয় তদন্ত। পুলিশ সন্ধান পায় লিলুয়ার বাসিন্দা দীপক সিংহের। পুলিশ জানতে পেরেছে, রাখির স্বামীর সঙ্গে ব্যাবসা করত দীপক। কয়েক মাস আগে কাজ ছেড়ে দেয় সে।
পুলিশের অনুমান, দীপককে রাখি চিনতেন বলেই ঘরে ঢুকতে দিয়েছিলেন। কিন্তু ঘরে ঢুকেই লুঠপাঠ চালাতে শুরু করে দীপক। বাধা দেন রাখি। প্রতিবাদের মুখে পড়ে ছুরি গিয়ে গলা কেটে খুন করে রাখিকে।
পুলিশ জানিয়েছে, আধার ও প্যান কার্ড তৈরির কথা বলে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে আগেও লুঠপাট করেছে দীপক। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে লুঠের উদ্দেশ্যেই খুন করেছে দীপক। কিন্তু পরিচয় গোপন রাখতেই কি নাম পিন্টু বলেছিল সে? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতকে চলছে জেরা।