কলকাতা: রাজ্যের যাবতীয় আপত্তি উড়িয়ে তিন আইপিএস অফিসারকে ডেপুটেশনে পাঠাল কেন্দ্র। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পূর্ব ঘোষণা মতোই রাজ্যের তিন আইপিএস অফিসারকে ডেপুটেশনে পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এদিন ৩ আইপিএসকে ডেপুটেশনে পাঠানোর নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীণ ত্রিপাঠীকে ৫ বছরের জন্য পাঠানো হচ্ছে সশস্ত্র সীমা বল বা সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)-তে।
আইজি দক্ষিণবঙ্গ রাজীব মিশ্রকে, ৫ বছরের জন্য ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ বাইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশে (আইটিবিপি)-তে পাঠানো হচ্ছে।
ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার এসপি ভোলানাথ পাণ্ডেকে, ৩ বছরের জন্য পাঠানো হচ্ছে ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট বিভাগে।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে, গত বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে যাওয়ার পথে জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলা হয়। ওই দিন, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন এই তিন আইপিএস অফিসার।
এরপরই প্রবীণ ত্রিপাঠী, রাজীব মিশ্র ও ভোলানাথ পাণ্ডেকে ডেপুটেশনে চেয়ে নবান্নে চিঠি পাঠায় দিল্লি। আপত্তি জানিয়ে গত শনিবার পাল্টা চিঠি দেয় রাজ্য সরকার।
যা নিয়ে চরমে পৌঁছয় কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। রাজ্য সরকার না কেন্দ্রীয় সরকার, আইপিএস-দের উপর এক্তিয়ার কার বেশি, এই নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
তবে অধিকাংশ আইন বিশেষজ্ঞদের মত, আইপিএস (ক্যাডার) আইনের ৬-এর ১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় ক্যাডারের অফিসারদের নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে মতানৈক্য থাকলে কেন্দ্রের ইচ্ছা বা সিদ্ধান্তই অগ্রাধিকার পায়।
এক্ষেত্রেও তাই হল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যে আপত্তি অগ্রাহ্য করেই, বৃহস্পতিবার ৩ আইপিএস অফিসারকে ডেপুটেশনে পাঠানোর কথা জানিয়ে নবান্নে চিঠি পাঠায় অমিত শাহর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের নতুন দায়িত্বে যোগ দিতে বলা হয়েছে প্রবীণ ত্রিপাঠী, রাজীব মিশ্র ও ভোলানাথ পাণ্ডেকে।
স্বাভাবিকভাবেই যা ভালভাবে নেয়নি রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটারে লিখেছেন, রাজ্যের আপত্তি উড়িয়ে কেন্দ্র যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের তিন IPS অফিসারকে ডেপুটেশনে পাঠাল, সেটা ক্ষমতার আস্ফালনের নজির এবং ১৯৫৪ সালের IPS ক্যাডার আইনের আপৎকালীন সংস্থানের অপব্যবহার। এটা রাজ্যে এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ এবং কর্তব্যরত অফিসারদের মনোবল ভেঙে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। ভোটের আগে এধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। এটা অসাংবিধানিক এবং একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে এভাবে রাজ্য প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে দেব না। পশ্চিমবঙ্গ অগণতান্ত্রিক শক্তির সামনে নতিস্বীকার করবে না।
প্রত্যাশিতভাবেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি।