কলকাতা: সাত পুরসভায় ভোটের হারের নিরিখেও প্রথম স্থানে তৃণমূল। পাঁচটিতে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। আর দু’টিতে দ্বিতীয় স্থানে বাম-কংগ্রেস জোট।
তৃণমূল সাতে সাত! বিরোধীরা কার্যত নেই বললেও চলে। কিন্তু, অঙ্কের হিসাবে যদি প্রথম হয়, তাহলে দ্বিতীয়ও হয়, সে যতই দূরের দ্বিতীয় হোক না কেন! আর তাই সাত পুরসভার ভোটের ফলে নজর বোলালো একটা বিষয় স্পষ্ট, তা হল, বিজেপি ফের দ্বিতীয় স্থানে।
তৃণমূলের ধারেকাছে যেমন বিজেপি নেই। তেমনই আবার বিজেপির ধারে কাছে নেই বাম-কংগ্রেস--




  • হলদিয়া পুরভোটে তৃণমূল একাই পেয়েছে প্রায় ৮৪ শতাংশ ভোট। এখানেও দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। মাত্র ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে তারা।

  • পাঁশকুড়ায় ৬৯ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃণমূল যথারীতি প্রথম স্থানে। এখানেও বিজেপি দ্বিতীয়স্থানে। তারা পেয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ ভোট

  • দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে তৃণমূল পেয়েছে ৬১ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপি পেয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ ভোট

  • কংগ্রেসের একদা গড় নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্পে তৃণমূল পেয়েছে প্রায় আশি শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থেকে বিজেপি পেয়েছে ৮ শতাংশ ভোট।



  • জলপাইগুড়ির ধুপগুড়িতে তৃণমূল-বিজেপি টক্করের লড়াই হয়েছে। তৃণমূল পেয়েছে আটচল্লিশ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপি পেয়েছে ৪১ শতাংশ ভোট।



  • দুর্গাপুর পুরসভায় তৃণমূল পেয়েছে প্রায় ৭১ শতাংশ ভোট। বামেরা ১১.৫১ শতাংশ এবং কংগ্রেস ২.৩৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ, দু’দল মিলিয়ে ১৩.৮৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ১৩.৮৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি দুর্গাপুরে তৃতীয় স্থানে।



  • নলহাটিতে পুরসভাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোট হয়েছিল। এখানে তৃণমূল পেয়েছে প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোট। বামেরা ৯.৫৫ শতাংশ এবং কংগ্রেস ৯.৯০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অর্থাৎ জোট পেয়েছে ১৯.৪৫ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে থেকে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ১৬ শতাংশ।


অর্থাৎ ভোট শতাংশের নিরিখে সাতটি পুরসভার মধ্যে সাতটিতেই প্রথম স্থানে তৃণমূল। পাঁচটিতে দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। দু’টিতে তৃতীয় স্থানে বাম-কংগ্রেস জোট। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়েছি। তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই আমাদের। কিন্তু, যে দু’টি পুরসভায় কংগ্রেস ও সিপিএম জোট বেধে লড়েছিল, সেই নলহাটি ও দুর্গাপুরে তৃণমূলের পর তারা রয়েছে যৌথভাবে দ্বিতীয়স্থানে।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপি-সিপিএম আঁতাতের জেরেই ভোট বাড়ছে বিজেপির। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি কেন দ্বিতীয় হল সিপিএমকে জিজ্ঞাসা করুন। সিপিএম অবশ্য দাবি করছে, মানুষকে তো ভোট দিতেই দেওয়া হয়নি, তাহলে আবার এই ফলাফলের গুরুত্ব কোথায়?
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন হোক কিংবা দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচন, বিজেপি কিন্তু তৃণমূলকে টক্কর না দিতে পারলেও, ভোটের নিরিখে লাগাতার দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে চলছে। সাতটি পুরসভার ভোটেও তার ব্যতিক্রম হল না। তাই যেভাবে বিজেপির ভোট বাড়ছে, আর বাম-কংগ্রেসের ভোট কমতে কমতে কার্যত শেষের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে তাতে এই দুই দল আর কোন উপায়ে সংগঠন বাঁচাবে, সেটাই এখন রাজনৈতিক মহলে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।