ডোমকল: আশঙ্কা ছিলই। ডোমকলে ভোট ঘিরে ঘটলও তাই। প্রথম পুরভোটে ডোমকলে রেহাই পেল না সংবাদমাধ্যমও!
ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পরই খবর আসে, জিতপুর হরিডোবা নতুনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ছাপ্পাভোট চলছে। খোঁজখবর নিতে সেখানে যান সাংবাদিক অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং চিত্র সাংবাদিক অ্যান্টনি ডি রোজারিও। সেইসময়ই নিজেদের তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচয় দিয়ে সেখানে হাজির হয় একদল দুষ্কৃতী।
তারা সরাসরি চড়াও হয় অর্ণব ও রোজারিওর ওপর! প্রথমেই আমাদের ক্যামেরাটি টার্গেট করে দুষ্কৃতীরা! কারণ, ছবি তোলা নিয়েই আপত্তি ছিল তাদের!ক্যামেরা দিতে না চাওয়ায়, দুষ্কৃতীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে রোজারিওর ওপর! তাঁর মুখে এলোপাথাড়ি ঘুসি মারা হয়। মাটিতে ফেলে চলে কিল, চড়, ঘুসি!
রোজারিওকে জোর করে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িতে তোলার সময়েও লাথি মারা হয় চিত্র সাংবাদিক রোজারিওকে! কেড়ে নেওয়া হয় ক্যামেরা!এখানেই শেষ নয়! রোজারিও যখন গাড়ির ভিতরে, তখন ইট দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা!অর্ণবকে আটকে রেখে, আহত রোজারিওর গাড়িকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে তারা! গাড়িটিকে ফলো করছিল একটি বাইক।

ওদিকে তখনও এলাকায় আমাদের প্রতিনিধি অর্ণবকে আটকে রেখেছে দুষ্কৃতীরা। বেশ কিছুক্ষণ পর এক ছাত্রের সাহায্যে কোনওমতে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছতে সক্ষম হন এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি। ঘটনাস্থল সংলগ্ন একটি ধানখেত থেকে এবিপি আনন্দর ক্যামেরা উদ্ধার করে পুলিশ।
হামলাকারীরা নিজেদের তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচয় দিলেও, জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য, এর নেপথ্যে সিপিএম-কংগ্রেসের চক্রান্ত দেখতে পাচ্ছে! ডোমকল পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সৌমিক হোসেন বলেন, দুঃখজনক। তবে আমাদের লোক নয়। সিপিএম-কংগ্রেস মিথ্যে প্রচার করছে। যদিও ডোমকলে এবিপি আনন্দর ওপর আক্রমণের ঘটনায় শাসক দলকেই নিশানা করেছে সিপিএম।
গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়, জিতপুরের এই বুথের সামনেই বোমা মেরে, গুলি করে খুন করা হয় সিপিএম কর্মী তহিদুল মণ্ডলকে। পুরভোটের আগের দিন তহিদুলের বাড়িতে গিয়েছিলাম আমরা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন হামলার সময় শনিবারের সেই প্রসঙ্গও টেনে আনে দুষ্কৃতীরা!
শুধু জিতপুরই নয়। খবর সংগ্রহে গিয়ে ডোমকলের ১১ নম্বর ওয়ার্ডেও এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে হুমকির মুখে পড়তে হয়! গোটাটাই ঘটে মহকুমা শাসকের দফতরের কাছে!
জিতপুরের মতো এখানেও, জোর করে গাড়িতে তুলে এলাকার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের। গণতন্ত্রের উৎসবে, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভেরই কণ্ঠরোধের চেষ্টা।