চোপড়া:  প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল বারাসাতের মনুয়া মজুমদারের বিরুদ্ধে। হিংস্রতায় কি তাকেও ছাপিয়ে গেল চোপড়ার সরস্বতী? কারণ সরস্বতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শুধু প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেই ক্ষান্ত হননি। প্রমাণ লোপাটের জন্য বাড়ির রান্নাঘরের মেঝে খুঁড়ে স্বামীর মৃতদেহ পুঁতেছেন। তারপর ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নির্বিকারভাবে সেই বাড়িতে প্রায় দু’সপ্তাহ বসবাস করেছেন!


যা দেখে অনেকে বলেছেন, এ তো একদিকে বারাসতের মনুয়া এবং ভোপালের উদয়নের মিশেল! কারণ, মনুয়া প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেন বলে অভিযোগ। আর ভোপালের উদয়ন প্রেমিকা আকাঙ্খাকে খুন করে, ঘরের মধ্যে দেহ পুঁতে তার ওপর সিমেন্টের বেদি তৈরি করেছিল।

চোপড়ার নারায়ণপুরে থাকতেন ৩৩ বছরের সুধীন ওরাও, তাঁর স্ত্রী, ২৮ বছরের সরস্বতী ওরাও। দম্পতির দুই সন্তান। মেয়ের বয়স চার বছর, ছেলের ২ বছর।

প্রতিবেশীদের দাবি, এমাসের ৩ তারিখের পর থেকে রাতারাতি সুধীন গায়েব হয়ে যান। স্ত্রী সরস্বতী ছিলেন নির্বিকার। তবে স্বামীকে নিয়ে প্রশ্ন করলেই তিনি কায়দা করে এড়িয়ে যেতেন। সন্দেহ ছিলই। সেটা আরও জোরদার হয় সোমবার সকালে, যখন বাড়ি থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে। প্রতিবেশীরা খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, সরস্বতী নেই। বাড়িতে রয়েছে ছোট ছোট দু’টি ছেলে-মেয়ে।

এরপর প্রতিবেশীরাই থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দেখে, বাড়িতে রান্নাঘরের মেঝে এবরো খেবরো। খোঁড়াখুঁড়ি করতেই বেরিয়ে আসে সুধীনের পচাগলা দেহ।

প্রতিবেশীদের দাবি, স্ত্রী সরস্বতীই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেছেন। মৃতের ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে কথা বলে তারা জানতে পেরেছে, সরস্বতীর সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। ৩ তারিখ রাতে সেই যুবক বাড়িতে আসে। সরস্বতী, তাঁর স্বামী সুধীন এবং ওই যুবক সকলে মিলে মদ্যপান করে।

পুলিশের অনুমান, সেই রাতেই স্বামীকে মদ্যপান করিয়ে, তারপর নাইটি দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করেন সরস্বতী ও তাঁর প্রেমিক।

তারপর দেহ পুঁতে দেয় রান্নাঘরের মেঝেতে। ১৫ দিন পর ১৮ তারিখ সেই দেহ উদ্ধার হল।

অর্থাৎ অভিযুক্ত সরস্বতী নিজের স্বামীকে খুন করে, রান্নাঘরে দেহ পুঁতে রেখে, সেই বাড়িতেই ১৫ দিন থেকেছেন! সম্ভবত, সেই রান্নাঘরে রান্না করে খেয়েছেন! কোনও সুস্থ মানুষ যে এটা করতে পারে, এটুকু ভাবতে পুলিশেরও ধাঁধা লেগে যাচ্ছে।