বাঁকুড়া:  আকাঙ্খা শর্মা খুনে অভিযুক্ত উদয়ন দাসকে আটদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠাল আদালত। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারা যোগ করার আর্জিও মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
ঠান্ডা মাথায় প্রেমিকাকে খুন করে, তাঁর দেহের ওপর কংক্রিটের বেদি তৈরি করেছিল সে। পুলিশের কাছে নির্বিকার মুখে এমনই কবুল করেছে উদয়ন দাস। ভোপালের এই গুণধর ছেলের ঠান্ডা মাথা চাক্ষুষ করলেন বাঁকুড়া আদালতের কর্মীরাও। সূত্রের খবর, এত কিছুর পর সামান্য অনুশোচনা তো দূরে থাক, মঙ্গলবার আদালতকক্ষে বসে সে আইনজীবীদের বলে, আমি নির্দোষ। তাড়াতাড়ি আমাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করুন।
মঙ্গলবার বাঁকুড়া আদালতে প্রায় ২৭ মিনিট ধরে চলে শুনানি। এর মধ্যে উদয়নের শারীরী ভঙ্গিতে টেনশনের কোনও ছাপ কারও চোখে পড়েনি। সূত্রের খবর, কাঠগড়ায় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক দেখছিল সে। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে চুল ঠিক করছিল। ভাবখানা এমন, যেন চারপাশে যা হচ্ছে, তাতে তার কিছুই যায় আসে না!
মঙ্গলবার সকাল পৌনে দশটা নাগাদ বাঁকুড়া সদর থানা থেকে উদয়নকে আদালতে আনা হয়। তিন-তিনটি খুনে অভিযুক্ত উদয়নের জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন তার আইনজীবী। তিনি বলেন, একটা অপহরণের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খুনের ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযুক্তের কাছ থেকে পুলিশের যা তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করার ছিল, তা তারা করেছে। এরপর অভিযুক্তকে নতুন করে হেফাজতে নিয়ে কী হবে? উদয়ন দাসকে জামিন দেওয়া হোক।
সরকারি আইনজীবী এর তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি সওয়াল করেন, এটা একটা ব্যতিক্রমী মামলা। কিছুই আচমকা ঘটেনি। অভিযুক্ত ঠান্ডা মাথায় পরপর খুন করেছে। প্রত্যেকটি ঘটনার পিছনে তার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল। তাই এই মামলাকে ব্যতিক্রমী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে। তদন্তের অনেকগুলো পর্যায় এখনও বাকি। তাই অভিযুক্তকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হোক।
সেই সঙ্গে তিনি এই মামলায় ৩০২ ধারায় খুন ও ২০১ ধারায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারা যোগ করার আর্জিও জানান। সওয়াল জবাব শুনে বিচারক খুন ও তথ্য প্রমাণ লোপাটের ধারা যোগের আর্জি মঞ্জুর করেন। উদয়নকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এদিন জেলা লিগাল এইডের তরফে মানসিক স্বাস্থ্য আইনের ২০ নম্বর ধারায় একটি আবেদন করা হয়। সূত্রের খবর, তাতে আর্জি জানানো হয়, উদয়নের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক নেই। কিন্তু, বিচারক সেই আবেদন গ্রহণই করেননি।