ভোপাল ও বাঁকুড়া: বাড়িতে আমেরিকা যাওয়ার কথা বলে গত বছর জুন মাসে ভোপাল যান আকাঙ্খা শর্মা। খুনের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। কিন্তু, সেটা নাকি উদয়নের ফ্ল্যাটে আকাঙ্খার প্রথমবার যাওয়া নয়!
হ্যাঁ! সাকেতনগরে উদয়নের এই ফ্ল্যাটে আগেও অনেকবার যান তাঁর প্রেমিকা আকাঙ্খা। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরার মুখে একথা স্বীকার করেছে খোদ উদয়নই। তদন্তকারীদের মনে প্রথম এই সন্দেহ জন্মায় ফ্ল্যাটের দেওয়ালে লাল-নীল কালিতে লেখা একাধিক তারিখ দেখে। পুলিশ সূত্রে দাবি, সাকেতনগরের ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁরা দেখেন, ঘরের দেওয়ালে পাঁচটি তারিখ এবং সেই সঙ্গে কিছু কথা লেখা। আর প্রত্যেকটির নীচে লেখা আকাঙ্খার নাম।
পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরার মুখে উদয়ন দাবি করেছে, আকাঙ্খা মোট ছ’বার তাঁর ভোপালের ফ্ল্যাটে আসেন। আর সেই তারিখে সাক্ষাতের কথাই আকাঙ্খা নিজে হাতে দেওয়ালে লিখে রাখেন।
যদিও, তদন্তকারীদের দাবি, উদয়নের কথায় তাঁরা যে একেবারে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে নিচ্ছেন, এমনটা নয়। কারণ, শুরু থেকেই সে একেক সময় একেক কথা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ফলে এমনটা হতেই পারে যে, আকাঙ্খার নাম করে দেওয়ালে ওই তারিখ লিখেছে উদয়নই। যাতে ভবিষ্যতে হঠাৎ কোনও তদন্তের মুখে পড়লে সে বলতে পারে যে, আকাঙ্খার সঙ্গে তার সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল ছিল। সেইজন্যই তার সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা আকাঙ্খা এমন উচ্ছ্বসিত হয়ে দেওয়ালে লিখে রেখেছে।
পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ছে কারণ, দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রত্যেকটি লেখাতেই আকাঙ্খা উদয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছেন! একটি জায়গাতে তো আকাঙ্খা এমনও লিখছেন, যে, ভারত ছাড়ছি! কিন্তু আদৌ তো আকাঙ্খা ভারতের বাইরেই যাননি! তাহলে কি করে আকাঙ্খা এমনটা লিখবেন? তাহলে কি উদয়নই আকাঙ্খার নাম করে আরও একটা ছক কষেছিল?
পুলিশ সূত্রে দাবি, তারা আকাঙ্খার হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সেই লেখার সঙ্গে দেওয়ালের লেখার আদল মিলিয়ে দেখা হবে। তাহলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে এই লেখা আদৌ আকাঙ্খার, নাকি এটাও উদয়নের ঠান্ডা মাথার কোনও চাল? তবে পুলিশ সূত্রে দাবি, গত বছরের শুরুর দিকে বেশ কয়েকবার আকাঙ্খার মোবাইল ফোনের টাওয়ার ভোপালে দেখা গিয়েছে। তবে তিনি উদয়নের ফ্ল্যাটেই গিয়েছিলেন কিনা, সেটা তদন্ত চালালেই পরিষ্কার হবে।