অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: বৈধ নথিপত্র ছাড়াই চা বাগান এলাকায় চলছিল আধার কার্ড তৈরির কাজ। খবর পেয়ে কালচিনি থানার অ্যান্টি-ক্রাইম পুলিশ বাহিনী উত্তর ২৪ পরগনা থেকে ২ পাণ্ডাসহ চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। 


আলিপুরদুয়ার আদালতে হাজির করলে অবৈধ আধার চক্রের ২ পাণ্ডাকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় বলে জেলা পুলিশ সূত্রে খবর।


জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই অবৈধ আধার কার্ড চক্রের সন্ধানে জেলা পুলিশের অভিযান চলছে। গত ১১ জুলাই একইভাবে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে অসমের এক বাসিন্দাসহ দুই জাল আধার কার্ডের কারবারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। 


একইভাবে গোপন সূত্রের খবর পেয়ে গতকাল কালচিনি থানার নিমতিঝোরা চা বাগান এলাকা থেকে বৈধ নথিপত্র ছাড়া আধারকার্ড তৈরি করার সময়ে এলাকার এক গোপন ডেরা থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 


ধৃতদের থেকে দুটি ল্যাপটপ, একটি করে ওয়েব ক্যামেরা, স্ক্যানার, ল্যাপটপ এবং বেশ কিছু অবৈধ আধার কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বৈধ নথিপত্র ছাড়াই সহজ সরল চা শ্রমিকদের ঠকিয়ে অবৈধ ভাবে আধার কার্ড তৈরি করার কারবার চলছিল। 


শুধু তাই নয়, মোটা টাকার বিনিময়ে তা করা হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করে আলিপুরদুয়ার এসিজেএম আদালতে পাঠানো হলে আদালত ধৃতদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার ২ মূল পাণ্ডাকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং স্থানীয় ৩ জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।


প্রতারিত হওয়া আদিবাসী যুবক মিথিলেশ ওঁরাও প্রতারকদের শাস্তির দাবি করেন। তিনি জানিয়েছেন, নিজের আধার কার্ডের ভুল সংশোধন করতে গিয়ে সাড়ে ৫০০ টাকা খুইয়েছেন। বহু মানুষই এভাবে প্রতারিত হয়েছেন বলে দাবি উঠেছে। 


জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, 'এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ৫ জনের মধ্যে ২ মূল পাণ্ডাকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এঁরা কীভাবে এই চক্রের কাজ চালাচ্ছে, তাও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


এর আগেও আমরা অভিযান চালিয়ে সফল হয়েছি। এলাকায় একটা প্রতারণা চক্র কাজ করছে। আমরা সর্বদা সতর্ক রয়েছি এবং এই প্রতারণা চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চলতে থাকবে।' এমনই দাবি জেলা পুলিশ সুপারের।


উল্লেখ্য,  আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের জন্য মূল সংস্থার সঙ্গে লিঙ্ক থাকা জরুরি। ওই লিঙ্ক কীভাবে প্রতারণা চক্রের হাতে আসছে এবং তা উত্তরবঙ্গ তথা জেলার চা বলয়ে বিস্তৃত হচ্ছে, সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।