ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কার মাঝেই এবার জিকা ভাইরাসের হানা। সতর্কতা জারি করল রাজ্য সরকার। জিকা ভাইরাস নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করা হবে পরামর্শদাতা কমিটি। সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং সেই সংক্রান্ত পদক্ষেপে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া।
কেরলে জিকা ভাইরাস সংক্রমিতের খোঁজ মেলার পর সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বর্তমানে নজরদারির ব্যবস্থা যে আছে তা সক্রিয় করতে হবে। সদ্যোজাত শিশুদের হেড ডায়ামিটার ম্যাজারমেন্টের রিপোর্ট নিয়মিত জমা দিতে হবে। কোনও সদ্যোজাত শিশুর হেড ডায়ামিটার ম্যাজারমেন্টে অস্বাভাবিক হলেই সেটা স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনতে হবে। বিশেষজ্ঞদের কমিটির কাজ হবে রাজ্যে জিকা ভাইরাস চিহ্নিত করা, প্রতিকারের উপায় সন্ধান সহ প্রতিরোধের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তার পরামর্শ দেওয়া। এই কমিটি গঠনের ব্যাপারে আজকের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও শেষ হয়নি বলে কয়েকদিন আগেই সতর্ক করে দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে দেখা গিয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এই পরিস্থিতিতে এবার নতুন আতঙ্ক জিকা ভাইরাস। মশাবাহিত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কেরলের অন্তত ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে ২৪ বছরের এক অন্তঃসত্ত্বাও আছেন। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ জানিয়েছেন, ‘তিরুঅনন্তপুরমের ১৩ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর দেহে জিকা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁদের নমুনা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ইফ ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়। সবারই নমুনা রিপোর্ট এসেছে। তাঁরা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।’যে অন্তঃসত্ত্বা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত, তিনি মঙ্গলবার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায় জিকা ভাইরাস। প্রথমে জ্বর, শরীরের বিভিন্ন অংশে র্যাশ, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, চোখ লাল হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে পঙ্গুও হয়ে গিয়েছেন। কয়েক বছর আগে ব্রাজিলে ছড়িয়ে পড়েছিল এই ভাইরাস। এবার এদেশেও হানা দিল জিকা। আর তাই এবার সতর্ক হতে এরাজ্যেও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর।