কলকাতা: রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর। তিনি দাবি করলেন, কেন্দ্রীয় অনুদানের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকা কোথায় গেল, তার হিসেব চাইলেন বিজেপি সভাপতি। সিন্ডিকেটের প্রসঙ্গে তুলে খোঁচা দিলেন রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে।


আগামী বছরই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়ানোর পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিতও করলেন বিজেপি সভাপতি। তাঁর দাবি, বাংলার মতো রাজনৈতিক হিংসা আর কোথাও হয় না। তাঁর প্রশ্ন, এটাই কি রবীন্দ্রনাথ-বিবেকানন্দর বাংলা? কেউ কি নিজের রাজনৈতিক আদর্শ প্রকাশ করতে পারবে না?

এ ধরনের হিংসা হলে বাংলায় উন্নয়ন হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেছেন, বাম সরকারকে সরিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু এরপরও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। এখন তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে। এই হামলা যত হবে বিজেপি ততই শক্তিশালী হবে। বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের অত্যাচারের মোকাবিলা করবে। বাংলায় বিজেপির অগ্রগতি কেউ রুখতে পারবে না। যাঁরা তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত তাঁদের সামলাবে দল। পরের বার বাংলার নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মমতার আমলে বাংলার কোনও উন্নতি হয়নি বলেও দাবি করেছেন বিজেপি সভাপতি।

কলকাতার আইসিসিআর-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ কংগ্রেসকে একহাত নিয়ে বিজেপি সরকারের সাফল্যের দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, কংগ্রেসের জমানায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠত। তিন বছর পরও বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এখনও কোনও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। মমতার মতো কট্টর বিরোধীরাও বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ তুলতে পারেননি।

অমিত শাহ বলেছেন, আগের ইউপিএ সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগত। তিন বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা ঐতিহাসিক ।

অমিত শাহর দাবি, মোদী সরকার প্রমাণ করে দিয়েছে, গ্রাম ও শহর, একইসঙ্গে দুয়েরই বিকাশ হতে পারে। জনকল্যাণের সঙ্গে সংস্কারও হতে পারে। মোদী সরকার গরিবের সরকার বলেও দাবি করেন তিনি।

জনধন অ্যাকাউন্ট প্রকল্পকে মোদী সরকারের বড় সাফল্য বলে দাবি করেন তিনি। এর ফলে আর্থিক সুবিধা প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়ছে।এতে ৫৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি রোখা গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

অমিত শাহর প্রতিশ্রুতি, ২০১৮-র মধ্যে সব গ্রামে বিদ্যুৎ‍ পৌঁছে যাবে।

পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি গরিব মানুষকে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

জিডিপির হার গোঁত্তা খাওয়ায় বিভিন্ন মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। কিন্তু সেই সমালোচনা উড়িয়ে অমিত শাহর দাবি, বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত গতির আর্থিক বৃদ্ধি ভারতের।

নোট বাতিল, জিএসটি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক মোদী সরকারের অন্যতম সাফল্য বলে দাবি করেছেন তিনি। মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও মোদী সরকারের কৃতিত্ব দাবি করেছেন বিজেপি সভাপতি।

অমিত শাহর অভিযোগ, মমতার সরকারের আমলে রাজ্যে জাল নোটের রমরমা চলছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ তুলেও মমতাকে নিশানা করেছেন তিনি।

দু্র্গাপুজোর বিসর্জন ইস্যুতেও তৃণমূল সরকারকে একহাত নিয়েছেন অমিত শাহ। মমতা ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করছেন বলেও অভিযোগ অমিত শাহর।