হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাজ্যের দুই জেলায় অস্ত্র তৈরির কারখানায় হানা সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার। উদ্ধার অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। কিং পিনের খোঁজে শুরু হয়েছে তদন্ত।
সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়া, দুই জায়গাতেই বছর খানেক ধরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলছিল অস্ত্র কারখানা। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগরের সন্তোষপুরে, সোমবার রাতে অভিযান চালায় সিআইডির বিশেষ দল। দক্ষিণ বিধানগড়ের এই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়। ৩৮টি অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু এমএম পিস্তল,
৩৮টি ম্যাগাজিন, অস্ত্র তৈরির প্রচুর সরঞ্জাম ও অসম্পূর্ণ পিস্তল।

ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার মধ্যে মহম্মদ নজরুল বিহারের সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা, মহম্মদ সাব্বির আলম বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। এর পাশাপাশি গ্রেফতার বাড়ি মালিক গৌতম রায়। তিনিও এই অস্ত্র কারবারের সঙ্গে জড়িত বলেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, সিআইডি জানতে পেরেছে, যে ঘরে অস্ত্র তৈরির কারখানা চলত, তার ভাড়া ছিল মাসে এক লক্ষ টাকা। সূত্রের দাবি, বাড়ির মালিকের গাড়িতে লাগানো থাকত পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের স্টিকার।
গাড়িতে পুলিশের স্টিকার লাগিয়েই কি তা হলে অস্ত্র পাচার হত? তদন্ত করে দেখছে সিআইডি। গত বছর, অক্টোবরে এই রবীন্দ্রনগরেই অস্ত্র কারখানার হদিশ পেয়েছিল পুলিশ।
আবারও সেই রবীন্দ্রনগর। অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলেছে হাওড়াতেও। টিকিয়াপাড়ার নূর মহম্মদ মুন্সি লেনের একটি তিনতলা বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০টি অসম্পূর্ণ ৯ এমএম পিস্তল। আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির প্রচুর সরঞ্জাম। বাড়ির মালিক মহম্মদ ইদ্রিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

সূত্রের খবর, বছর খানেক আগে শেখ ফিরোজ ও শেখ আনসারি নামে বিহারের দুই বাসিন্দা বাড়িটি ভাড়া নেয়। অভিযোগ, বলা হত লেদ কারখানা, কিন্তু তার আড়ালেই চলত অস্ত্র তৈরির কাজ। এই দুটি অস্ত্র কারখানা থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র পাচার হত বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। অস্ত্র তৈরি ও পাচারচক্রের নেপথ্যে বিহারের মুঙ্গেরের বেআইনি অস্ত্র কারবারিরা থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অস্ত্র কারবারের জাল কতদুর বিস্তৃত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।