সোমনাথ মিত্র, হুগলি: চাকরি দেওয়ার নামে সরকারি নথি জাল করে প্রতারণার অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির প্রতারণাচক্রের জাল ছড়িয়ে পড়ে তারকেশ্বরেও। রোড সেফটি অর্গানাইজেশনের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা চলত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত পলাতক।


পুলিশ সূত্রে দাবি, মূলত তারকেশ্বরের বৈদ্যপুর থেকেই চলত এই প্রতারণাচক্র। মঙ্গলবার চক্রের ডেরা থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম সুমন পাল ও আনন্দকুমার সোরেন।


ধৃত আনন্দকুমার সোরেন তারকেশ্বরের নতিবপুর হাইস্কুলের শিক্ষক। পুলিশ সূত্রে দাবি, শিক্ষকতার পাশাপাশি মোটা কমিশনের ভিত্তিতে এই সরকারি স্কুলের শিক্ষক এখানে কাজ করতেন। তদন্তকারীদের আরও দাবি, রোড সেফটি অর্গানাইজেশনের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট খোলেন বিনয়কুমার মালিক নামে এক ব্যক্তি।


ভুয়ো ওয়েবসাইটটিকে বিশ্বাসযোগ্য করতে তাতে প্রধানমন্ত্রী ও অশোকস্তম্ভেব ছবি ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয়, অভিযোগ রাজ্যপালের অভিনন্দন-বার্তা দেখিয়ে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করা হত।


অভিযোগকারী দিব্যেন্দু দাস জানাচ্ছেন, 'রোড সেফটি অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যানকে আমরা পয়সা দিয়েছিলাম, বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে চাকরি হবে। রাজ্যপালের অভিনন্দনবার্তাও দেখিয়েছিল।'


সৌভিক মান নামে আরও এক অভিযোগকারী জানিয়েছেন, 'আমাদের একটা ট্রেনিং দিয়েছিল, বলেছিল চাকরি দেবে। পুলিশ সূত্রে দাবি, মূল অভিযুক্ত বিনয়কুমার মালিক ২০১৯ সালে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রাষ্ট্রীয় জনাধিকার সুরক্ষা পার্টির নামে ভোটে লড়েন তিনি। অভিযুক্তের বাড়ি তারকেশ্বরের মহেশপুরে। সেখানে তাঁর বাড়ির দেওয়ালে লাগানো রয়েছে এই বোর্ডটি। তবে, সেখানে কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। 


অভিযুক্তের মা আশালতা মালিকের দাবি, 'আমার ছেলে রোড সেফটি অর্গানিইজেশনের ইঞ্জিনিয়ার, অনেকে আসতো ট্রেনিং নিতে। পুরো বিষয়টা আমি জানি না, তবে আমার ছেলে এরকম করেছে ভাবতেই পারি না।' 


মূল অভিযুক্ত বিনয়কুমার মালিক পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ডানকুনি-সহ বিভিন্ন জায়গায় এই প্রতারণাচক্রের জাল ছড়িয়ে রয়েছে।