কলকাতা: রাজ্যের তিন বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেই বিরোধীদের ধরাশায়ী করেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই কালিয়াগঞ্জে বিজয়ী হয়েছে রাজ্যের শাসক দল। খড়্গপুর সদর আসনেও জয়ী তৃণমূল। করিমপুর আসনে জয়ের দোরগড়ায় তারা। করিমপুরের দূর্গ ধরে রাখার পাশাপাশি খড়্গপুর সদর ও কালিয়াগঞ্জে ঘাস-ফুল ফুটিয়েছে তৃণমূল। উপনির্বাচনে এই সাফল্যকে রাজ্যের মানুষের উদ্দেশ্য উত্সর্গ করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি আনন্দকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিজেপির ঔদ্ধত্য, যথেচ্ছাচার ও অহংকার এবং রাজ্যকে অপমানের জবাব দিয়েছেন মানুষ। তিনি বলেছেন, এটা মা-মাটি-মানুষের জয়, বাংলার সম্প্রীতি, ঐতিহ্য,একতা ও সংস্কৃতির জয়। বিজেপির আসল রূপ মানুষ দেখে নিয়েছেন। এনআরসি ইস্যু নিয়েও বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, এনআরসি-র ইস্যু তুলে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি। তিনি বলেছেন, এই তিন কেন্দ্রে রাজবংশী, অবাঙালি, সংখ্যালঘু, হিন্দু, আদিবাসী ও তপশিলী জাতি-সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আর্থিক নীতি, বিলগ্নীকরণ নীতির তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, লক্ষ লক্ষ মানুষের কাজ হারাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী কৃষক ও শ্রমিকদের সমস্যার প্রতি কেন্দ্রের অবহেলার অভিযোগও তুলেছেন। তিনি বলেছেন, এসব জ্বলন্ত সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে পাকিস্তানের কথা বলছে বিজেপি।
মুখ্যমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ঘটনাকে বিজেপির পক্ষে বড় বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেছেন।


তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'এই জয় মানুষের জয়। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা আবার রেখেছেন। সর্বস্তরের মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপির অর্থনীতিকে শেষ করে দেওয়া, জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা, প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিজেপির আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন’।
তিনি বলেছেন, বিজেপি এনআরসি-র কথা তুলে ধরে মানুষের মধ্যে বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। উপনির্বাচনে এনআরসি নামক ভয়ভীতি দেখিয়ে লোকসভা থেকে শুরু করে তারা যে ধরনের রাজনৈতিক চাল চেলেছিলেন, মানুষের জীবনকে বাজি ধরে, তা সফল হয়নি। এর বিরুদ্ধে মানুষ জোটবদ্ধ হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকেই এনআরসি-র বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন। মানুষকে আশ্বস্ত করেন।
পার্থ বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ ধংস করে দিয়েছে বিজেপি। দেশজুড়ে কর্মসংস্থানের অভাব।কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখতে পারেনি বিজেপি। এর বিরুদ্ধেই মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ণের সপক্ষে রায় দিয়েছে।