বারাসত: #বামনগাছির প্রতিবাদী যুবক সৌরভ চৌধুরী হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করল বারাসত আদালত।  দোষী সাব্যস্ত ১২ জন। দোষী মূল অভিযুক্ত শ্যামল কর্মকার সহ ১২ জন। খুন, অপহরণ ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মতো গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ৯। বাকি তিনজনকে অভিযুক্তদের আশ্রয়দানের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। খুন, অপহরণ, তথ্যপ্রমাণ লোপাট ছাড়াও অস্ত্র আইনে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মূল অভিযুক্ত শ্যামল কর্মকার।


কাল সাজা ঘোষণা করা হবে। বেকসুর খালাস অনুপ তালুকদার নামে একজন।

এদিন রায় ঘোষণার আগে পুলিশের সামনে নির্বিকার ছিল মামলায় মূল অভিযুক্ত শ্যামল কর্মকার। আজ বারাসত আদালতে পেশ করার সময় মামলা নিয়ে প্রশ্ন করলে, তার নির্বিকার উত্তর ছিল, রায় শুনে আসি, তারপর যা বলার বলব।

দু’বছর আগে ৫ জুলাই এলাকায় মদ, জুয়ার ঠেকের প্রতিবাদ করে খুন হতে হয়েছিল সৌরভকে। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে পিটিয়ে মারা হয়। দত্তপুকুর ও বামনগাছি স্টেশনের মাঝে রেললাইনে সৌরভের দেহ ফেলে রেখে দেয় খুনিরা। ট্রেনের ধাক্কায় দেহ টুকরো টুকরো হয়ে যায়। দেহের মাত্র ৫টি টুকরো উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘটনায় বিভৎসতায় শিউরে ওঠে রাজ্যবাসী।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে চার্জশিট পেশ করে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। ১৫ দিনের মধ্যে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়।
ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়ে ছদ্মবেশ নিলেও কিছুদিন পরে তারাপীঠ থেকে ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত শ্যামল কর্মকার।
সৌরভ খুনের মামলায় মোট অভিযুক্ত ১৫ জন। গ্রেফতার হয়েছে ১৪ জন। একজন এখনও ফেরার। ধৃতদের মধ্যে পলি মাইতি নামে এক মহিলা বর্তমানে জামিনে মুক্ত। রাজসাক্ষী হয়েছে উত্তম শিকারী। মামলায় সাক্ষী দিয়েছেন ৪১ জন।
বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীনও বামনগাছির চৌধুরী পরিবারকে বারবার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। পাড়ায় এক নিরীহ ব্যক্তিকে মারধরের প্রতিবাদ করায় কয়েক মাস আগে আক্রান্ত হন সৌরভের বাবা ও দাদা। এই পরিস্থিতিতে আজ রায় ঘোষণা করা হল বারাসত আদালতে।
গত দু’বছরে ঝড়ঝাপটা কম সহ্য করতে হয়নি! তা সত্ত্বেও ছোট ছেলের খুনের বিচার পেতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছে বামনগাছির চৌধুরী পরিবার।  তাদের দাবি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এলাকায় অপরাধীদের দৌরাত্ম্য কমবে না।