পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া:  হাতে আর বেশি সময় নেই। মেরেকেটে দুমাসের থেকে সামান্য বেশি। তারপরই পুজোর আনন্দে মেতে উঠবে বাঙালি। কিন্তু পুজো আসার গন্ধ ডাক দিলেও মন ভালো নেই 'টেরাকোটার গ্রাম'-এর। টেরাকোটার গ্রাম হিসেবে পরিচিত বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার। করোনা আবহে ভাটা পড়েছে শিল্পে। মারণ ভাইরাসের কামড়ে গত বছর পুজোয় তেমন বরাত তাঁরা পাননি। পরিস্থিতির বদল হয়নি এবারও। 


টেরাকোটার হাতি, ঘোড়া থেকে ঘর সাজানোর নানা জিনিসপত্রের জগৎজোড়া খ্যাতি। এমনকি পোড়া মাটির গয়না তৈরিতেও পাঁচমুড়ার কুমোর পাড়ার শিল্পীদের সারা বিশ্বে ব্যাপক সুনাম রয়েছে। এমনকী একটাসময় 'পাঁচমুড়ার ঘোড়া' আন্তর্জাতিক স্তরেও সদর্পে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। আর এই জায়গা থেকেই মণ্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা সব বিষয়েই কলকাতা সহ রাজ্য জুড়ে ব্যাপক চাহিদা ছিল এখানকার মৃৎশিল্পীদের। আর সেই সুযোগে বাড়তি কিছু রোজগারের সুযোগ তৈরি হতো তাঁদের। কিন্তু করোনা এসে সব আশাতেই জল ঢেলে দিয়ে গেল। এবছর এখনও পর্যন্ত এখানকার একজন শিল্পীও প্রতিমা তৈরি থেকে মণ্ডপ সজ্জার ডাক পাননি। ফলে চরম হতাশা গ্রাস করছে।


মৃৎশিল্পী ও শিক্ষক বিশ্বনাথ কুম্ভকার বলেন, করোনা আবহে শিল্প ও শিল্পী দু'জনই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। পুজোর অর্ডার আমরা এখনও কেউ পাইনি। এরপর পেলে বড়কাজে সমস্যা হবে। কারণ টেরাকোটা শিল্প কর্ম ফুটিয়ে তোলা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। আর সেই সময়টা এখন হাতে নেই। কারণ পুজো প্রায় দোরগোড়ায়। এখনও অর্ডার এলে ছোটো প্রতিমা বা মণ্ডপ সজ্জার কাজ সঠিক সময়ে করে ফেলতে পারবেন বলে তিনি জানান।


আরেক শিল্পী ভূতনাথ কুম্ভকারের কথায়, করোনায় সব ওলট পালট করে দিল। পুজোর মণ্ডপ সজ্জা বা প্রতিমা তৈরি করে মোটা অঙ্কের রোজগার হতো। কিন্তু এবার পুজো কমিটির তরফে তেমন কোন উৎসাহই চোখে পড়ছে না।  ফলে তাঁরা পুজোর কাজ আদৌ পাবেন কি না তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত আছেন বলে তিনি জানান।