প্রসূন চক্রবর্তী, বাঁকুড়া: টাকার বিনিময়ে মিলছে ভ্যাকসিনের অগ্রাধিকার, অথচ সকাল থেকে লম্বা লাইন দিয়েও স্থানীয়দের মিলছে না ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিনে দুর্নীতি হচ্ছে, অভিযোগ বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির। পাল্টা বিধায়ককে তোপ শাসক দলের নেতার। সবমিলিয়ে ভ্যাকসিনের আকাল নিয়ে ডামাডোল অব্যাহত।


রাজ্যজুড়ে অনূর্ধ্ব-১২ বছরের শিশুদের মায়েদের ভ্যাকসিনে অগ্রাধিকারের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশমতো রাজ্যজুড়ে সেই সব মায়েদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে জোরকদমে। কিন্তু তার উল্টো চিত্র উঠে এল বাঁকুড়ার মেজিয়ার রামচন্দ্রপুরে। ভ্যাকসিন নিতে সকাল থেকে লম্বা লাইন পড়ে রামচন্দ্রপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু বেলা বারোটায় নোটিশ দিয়ে জানানো হয় এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ভ্যাকসিন নিতে আসা মহিলারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মেজিয়া থানার পুলিশ। পুলিশকর্মীরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।


এই ভ্যাকসিন না পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। মেজিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রবিলোচন গোপ দাবি করেছেন, ‘গতকাল বিকেলে শালতোড়া বিধানসভার বিধায়ক চন্দনা বাউরি ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে সকলকে লাইন দেওয়ার কথা জানান। এতেই আজ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’


পাল্টা শালতোড়ার বিধায়কের দাবি, ‘গোটা রাজ্যের পাশাপাশি মেজিয়া ব্লকেও ভ্যাকসিনে দুর্নীতি হচ্ছে। সকাল থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও সাধারণ মানুষ পাচ্ছেন না ভ্যাকসিন। অথচ টাকার বিনিময়ে বাইরে থেকে লোকজনকে এনে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।’


ভ্যাকসিন ভোগান্তি জেলায় জেলায়। কোথাও বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও ভ্যাকসিন না পাওয়ার অভিযোগ, কোথাও ভ্যাকসিনের টোকেনের জন্য লাইন নিয়ে অশান্তি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই ছবি দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে হুগলির চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে লাইন দেন কয়েকশো মানুষ। বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও ভ্যাকসিন মেলেনি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে, দুর্গাপুর-চণ্ডীতলা অহল্যাবাই রাস্তা অবরোধ করা হয়। পরে পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। মুর্শিদাবাদেও ভ্যাকসিন নিয়ে বিশৃঙ্খলার ছবি দেখা গিয়েছে।