পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া:  শিকলবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে বাঁকুড়ার সিমলাপালের মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের। দুর্ঘটনা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে এই ব্যবস্থা বলে দারি করেছে পরিবার। অসুস্থ যুবকের চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক।


মাটির চার দেওয়ালে বন্দি জীবন।দু’পায়ে  বাঁধা বেড়ি।একদিন-দু’দিন নয়। গত পাঁচ বছর ধরে এভাবেই জীবন চলছে বাঁকুড়ার সিমলাপালের শালবনি গ্রামের বাসিন্দা এই যুবকের।পরিবার সূত্রে দাবি, ২০১৬ থেকে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন যুবক।


রোগ ধরা পড়ার পর, এভাবেই রাখা হয়েছে তাঁকে। পরিবারের দাবি, বিপদের হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতেই আটকে রাখা হয় শিকলে।অথচ একসময়ে এলাকায় মেধাবি ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিল যুবকের। স্নাতক হওয়ার পর, চাকরির চেষ্টাও শুরু করেছিলেন।তারপর হঠাৎই ছন্দপতন। পরিবার সূত্রে দাবি, পাঁচ বছর আগে, পার্শ্বশিক্ষকের ইন্টারভিউ দিয়ে বাড়ি ফেরার কদিন পরই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।এই অবস্থায় অসহায় যুবকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন। 


সিমলাপালের বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সিমলাপালের বিডিও বাইট- অরিজিৎ দাস জানিয়েছেন, আজ ওই এলাকায় গিয়েছিলেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। 


দিন কয়েক আগে কোচবিহারের মাথাভাঙায়, মানসিক ভারসাম্যহীন এক নাবালিকাকে খাঁচায় বন্দি করে রাখার খবর সামনে এসেছিল। সেখানেও পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিপদ থেকে বাঁচাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ, ওই নাবালিকা হুটহাট বাইরে বেরিয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বাড়িতে থাকলেও আগুনে সামনে চলে যায়। কাঠ দিয়ে ঘেরা একটি খাঁচার মধ্যেই নাবালিকাকে বসিয়ে রাখতেন তার বাবা-মা।  তার চিকিৎসাও ঠিকমতো হচ্ছিল না। বলা ভাল, চিকিৎসা করানোর মতো সঙ্গতি নেই বাবা-মায়ের।মেয়েটির বাবা পেশায় দিনমজুর।  জন্ম থেকে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতদরিদ্র পরিবারের ওই নাবালিকা। চিকিৎসা করানোর জন্য অনেকবারই স্থানীয় পঞ্চায়েত ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন ১৬ বছরের ওই নাবালিকার বাবা-মা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।এরপর সেই খবর সামনে আসার পর মাথাভাঙার ২ ব্লকের বিডিও ওই নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছিলেন। নাবালিকার স্বাস্থ্যপরীক্ষাও করা হয়েছিল। 


এবার প্রায় একই ঘটনা বাঁকুড়াতেও দেখা গেল।