পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : স্কুল ছাড়ার শংসাপত্র পাওয়ার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের 'মিষ্টিমুখের' জন্য দিতে হবে মাথাপিছু পঞ্চাশ টাকা! এমনই অবাক করার মতো ঘটনা ঘটার অভিযোগ বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবক ও ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিবাদে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। ঘটনাস্থলে সংবাদমাধ্যম পৌঁছতেই তড়িঘড়ি বন্ধ হয়ে যায় 'মিষ্টিমুখের' টাকা নেওয়ার প্রক্রিয়া। স্কুলের কিছু অশিক্ষক কর্মচারী এমন 'কাণ্ড' ঘটিয়েছে বলে জানিয়ে স্কুলের তরফে ভুলস্বীকার করে নিয়েছেন বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধন ঘোষ। পাশাপাশি এই ঘটনায় বাঁকুড়ার ডিআই গৌতম মাল বলেছেন, 'ঘটনাটা জানার পরই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের থেকে গোটা বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। উনি কী জানান দেখি, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।'


গত বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল থেকে চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীই। নিয়ম অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিটের সঙ্গেই স্কুলের পক্ষ থেকে পরীক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা স্কুল ছাড়ার শংসাপত্রও। পরবর্তীতে কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি এই শংসাপত্র। শুক্রবার থেকে স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের মার্কশিট দেওয়ার কাজ শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, মার্কশিট সঙ্গে স্কুল ছাড়ার শংসাপত্র নিতে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের বলা হয় মাথাপিছু মিষ্টিমুখ করানোর জন্য ৫০ টাকা করে দিতে।


অত্যন্ত জরুরি এই শংসাপত্র পেতে অনেকেই গতকাল থেকে মাথা পিছু পঞ্চাশ টাকা করে দিয়ে স্কুল লিভিং শংসাপত্র তুলে নেয়। কিন্তু তাল কাটে আজ দুপুরে। স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট নিতে গিয়ে অনৈতিকভাবে এই টাকা দিতে অস্বীকার করেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। আর সেই খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা স্কুলে যেতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। পরে টাকা নেওয়ার ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়তেই প্রধান শিক্ষক মেনে নেন, স্কুলের অশিক্ষক কর্মীরা সারাবছর কাজ করেন, তারাই মিষ্টি খেতে ওই টাকা নিচ্ছিল। বিষয়টি অন্যায় বলে স্বীকার করে দ্রুত টাকা নেওয়া বন্ধের নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক। বাঁকুড়ার ডিআই গৌতম মাল অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, 'এই ধরণের যে কোনও টাকা নেওয়া অনৈতিক।'