রাণা দাস, কাটোয়া: জনসেবাই একমাত্র লক্ষ্য ছিল। আর তাই রাতারাতি সিদ্ধান্ত। টোটো কিনে সেটাই জনসেবায় কাজে লাগিয়েছেন, কাটোয়ার যুবক ডেভিড মিঞা। চারপাশের পরিস্থিতি দেখে একটা টোটোকেই অ্যাম্বুলেন্সে পরিণত করেছে ডেভিড।


এই টোটো অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে রয়েছে সমস্ত পরিষেবা। অক্সিজেন, স্ট্রেচার থেকে শুরু করে রোগীর পরিজনদের বসার জায়গা। সবই মিলবে এই টোটোয়। কেউ অসুস্থ হয়েছে খবর পেলেই হুটার জ্বালিয়ে টোটো অ্যাম্বুলেন্স ছুটে বেড়াচ্ছে শহরের অলিতে গলিতে। 


কাটোয়ার বাসিন্দা জানাচ্ছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে তিনি মানুষের হয়রানির ছবিটা দেখেছেন। সেই থেকেই এই সিদ্ধান্ত। তখনই তার মাথায় কিছু করার ভাবনা আসে। কীভাবে একটা ছোটো অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করা যায় সেই নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন ডেভিড।


এর পরই একটা টোটো কেনেন। এর পর তাকে অ্যাম্বুলেন্সের রূপ দেন। ডেভিড জানিয়েছেন, প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে এই অ্যাম্বুলেন্সটি তৈরি করতে। তবে সাধারণ মানুষের সমস্যা মেটাতে পেরে খুশি ডেভিড। তিনি জানিয়েছেন এমনভাবেই এই টোটো তৈরি যাতে গলির মতো সরু রাস্তাতেও এই টোটো ঢুকতে পারে। 


এবার এই অ্যাম্বুলেন্স কাটোয়া পৌরসভার হাতে তুলে দিতে পারলেই স্বস্তি পাবেন। অন্তত এমনটাই জানাচ্ছেন ডেভিড। এ প্রসঙ্গে কাটোয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আপাতত পৌরসভার সাতটা অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও গলির ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে অসুবিধা হয়। তবে এই অ্যাম্বুলেন্স পেয়ে তারা উপকৃত। সরু গলিতে এই অ্যাম্বুলান্স ব্যবহার করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।


উল্লেখ্য রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আপাতত নিয়ন্ত্রণে। তবে সঙ্কট এখনও যে কাটেনি তা নিয়ে বারবার সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। মহামারি আবহে কখনও অ্যাম্বুলেন্স, কখনও অক্সিজেন, কখনও হাসপাতালের বেড সঙ্কট। একাধিক সমস্যায় পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। তবে সাধারণ মানুষের হয়রানি ঘোচাতে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন এ যাবৎ। কখনও ভ্যান নিয়ে করোনা রোগীকে আনা নেওয়া করেছেন চালক। কখনও আবার টোটোকেই বানিয়ে ফেলা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। সবমিলিয়ে মহামারি চরম দুর্দিনেও মানবিকতার নজির গড়েছেন ডেভিডরা।