কলকাতা: কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় অধ্যক্ষ সম্মেলনে রাজ্যপালের ভূমিকাতেও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন ‘লোকসভার সদস্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে নিতে গেলে লোকসভার অধ্যক্ষর অনুমতি নিতে হয়। বিধানসভার ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। কিন্তু বিধানসভার ক্ষেত্রে অন্য জায়গা থেকে অনুমোদন নেওয়া হচ্ছে। এটা বিধানসভার মর্যাদার পরিপন্থী।
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘কথায় কথায় বিধানসভার বিষয় কেউ কেউ আদালতে নিয়ে যাচ্ছেন। আদালত গ্রহণও করছে। যদিও, বিষয়টির নিষ্পত্তি বিধানসভাতেই সম্ভব। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়, সংসদীয় ব্যবস্থা বিপন্ন হওয়ার মুখে। এনিয়ে আলোচনা দরকার, রক্ষা করতে হবে আইনসভার মর্যাদা।’
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিধানসভার অনেক বিধায়ক চলে যাচ্ছেন রাজ্যপালের কাছে। অভিযোগ শুনে বিধানসভার খুঁটিনাটি বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন রাজ্যপাল।
লোকসভার অধ্যক্ষের উদ্যোগে অধ্যক্ষদের এই সর্বভারতীয় সম্মেলন।
বিজেপি অধ্যক্ষের সমালোচনা করেছে। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘তৃণমূল নেতাই থেকে গিয়েছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতার ঊর্ধ্বে উঠে বিধানসভার অধ্যক্ষ হতে পারেননি।
শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘বিধানসভায় বিরোধীদের বলতে দেওয়া হয় না। মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন নিয়ে কী করতে পেরেছেন? বিধানসভার অধ্যক্ষ কি শুধুই দলবদলের নীরব সাক্ষী হয়ে থাকবেন?’
উল্লেখ্য, আগামী ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর একটায় ইডি-সিবিআই-এর দুই অফিসারকে তলব করেছেন বিধানসভার স্পিকার। নারদ-মামলায়, তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের ক্ষেত্রে, নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে, তাঁদের তলব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়...মলয় ঘটক...তৃণমূলের একের পর এক হেভিওয়েটকে CBI কিংবা ED...হয় তলব করছে, নয় জিজ্ঞাসাবাদ। যা ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই নারদকাণ্ডে তিন বিধায়কের নামে চার্জশিটও জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।আর এ ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে, ইডি এবং সিবিআইয়ের দুই অফিসারকে তলব করেছেন বিধানসভার স্পিকার। ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর একটায় সিবিআইয়ের ডিএসপি সত্যেন্দ্র সিং এবং ইডি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রথীন বিশ্বাসকে তলব করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই মর্মে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। নারদকাণ্ডে সম্প্রতি পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় ইডি। এর মধ্যে বিধায়ক
ফিরহাদ হাকিম,সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রর নাম রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে FIR হয়েছে। বিধানসভার স্পিকার জানিয়েছেন, বিধায়কদের বিরুদ্ধে এই ধারায় চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি নিয়ে হয়। তা না করে, বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা হয়েছে। বিধানসভাকে এড়িয়ে, এধরনের পদক্ষেপ, বিধানসভার পক্ষে অমর্যাদাকর। এই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করা আমার কর্তব্য। সেই কারণেই তাঁদের তলব করেছি।