কলকাতা: দৈনিক ভাস্করের অফিসে আয়কর দফতরের হানার নিন্দা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্যুইটে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘এটা সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর আক্রমণ। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার আরও একটি নিষ্ঠুর উপায়। অতিমারীর সময় দেশ যে সঙ্কটের ভিতর দিয়ে গেছে দৈনিক ভাস্কর সাহসের সঙ্গে সেইসব ঘটনা তাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। সত্যকে প্রকাশ্যে আনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের কণ্ঠরোধ করার এই চেষ্টার আমি নিন্দা করছি। এটা গণতন্ত্রের মূল নীতির বিরোধী। সংবাদমাধ্যমের কাছে শক্তভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানাই। আমরা সবাই মিলে একনায়তন্ত্রকে রুখব।’


সাংবাদিক বৈঠকে মমতা আরও বলেন, ‘দৈনিক ভাস্করের উপর যেভাবে আয়কর হানা, তার তীব্র নিন্দা করছি।’


এদিন বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘পেগাসাস ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির চেয়েও বড় কেলেঙ্কারি। এভাবে হিটলারি কায়দায় কতদিন মানুষকে ভয় দেখিয়ে রাখবে? কাউকে কথা বলতে দেওয়া হয় না। শুনেছি আরএসএসের অনেকের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। ফোনে প্লাস্টার লাগিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ করছি। কালীঘাটের অফিসে সুব্রত বক্সি, অভিষেক, পিকের সঙ্গে মিটিং করছিলাম। আমরা ফোনে কথা বলিনি, তাও পুরো বিষয়টি রেকর্ড হয়ে গেছে। পিকে-র ফোন অডিট করে দেখেছে, মিটিংয়ে কী আলোচনা হয়েছে, সব রেকর্ডিং হয়েছে। আমরা ফোনে কথা বলিনি, তাও সব রেকর্ডিং হয়ে গেছে। অভিষেক, পিকে, আমারও ফোন ট্যাপ করা হয়েছে। এত কিছুর পরেও লজ্জা নেই। ভোটের পরে নয়, হিংসা হয়েছে ভোটের সময়। ৩ মে পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে ছিল রাজ্য সরকার। ৫ মে শপথগ্রহণ করার পরে পুলিশ সব নিয়ন্ত্রণ করেছে। ভোটের পরে তৃণমূলের উপর সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালাচ্ছে বিজেপি। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একজন বিজেপির সদস্য।’


মমতা আরও বলেন, ‘বিচারালয়, নিরপেক্ষ সংস্থা দুর্বল হয়ে গেলে, গণতন্ত্রের ঠিকানা কোথায়? সুপার এমার্জেন্সি চলছে, আমরা এর তদন্ত চাই। কারা পেগাসাস কিনল, কেন স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত করছে না কেন্দ্র? আমরা এর কাছে মাথা নত করব না, এরকম জুলুমবাজি চলবে না। দিল্লি যাব, প্রধানমন্ত্রীর সময় পেয়েছি। অক্সিজেনের অভাবে কারও মৃত্যু হয়নি বলে মিথ্যে ভাষণ কেন্দ্রের। অনুমতি পেলে দিল্লি সফরে সংসদ ভবনে যেতে পারি। আমি আমার জন্য চিন্তিত নই, দেশবাসীর জন্য চিন্তিত।’ 


রাজ্যের প্রকল্প প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। ১৬ অগাস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফের ‘দুয়ারে সরকার’। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, স্বাস্থ্য সাথী, খাদ্য সাথীর আবেদন করা যাবে। কৃষক বন্ধু, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদন করা যাবে। রাজ্যে বালি খাদান নীতির কেন্দ্রীয়করণ করা হচ্ছে। বালি, মাটির মতো প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করা যাবে না। অনিয়ম দেখলে জানান, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। শিক্ষকদের বদলির ব্যাপারে চালু হচ্ছে উৎসশ্রী প্রকল্প। বাড়ি থেকে অনেক দূরে যাতে কাউকে যেতে না হয়, তার জন্য নতুন প্রকল্প। বদলির জন্য অনলাইন পোর্টালে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ১৬ অগাস্ট রাজ্যজুড়ে খেলা দিবস পালন করা হবে। খেলা দিবসে রাজ্য জুড়ে ক্লাবগুলিকে ১ লক্ষ ফুটবল বিলি করা হবে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে মিলবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধে। পরে আবেদন করলেও ১ সেপ্টেম্বর থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধে।’