২০১৭-তে জিএসটি চালু হওয়ার সময়ে মনে করা হয়েছিল, প্রতি বছর ১৪% করে কর সংগ্রহ বাড়তে পারে রাজ্যগুলির।
তা নাহলে ২০২২ পর্যন্ত সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেবে কেন্দ্র।
কিন্তু বাংলা-সহ বহু রাজ্যের অভিযোগ, জিএসটি-বাবদ ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছে না তারা। এই নিয়ে ২৬ অগাস্ট সনিয়া গান্ধীর ভার্চুয়াল বৈঠকেও সরব হন বিরোধীদের একাংশ। সেদিনও শুরুটা করেছিলেন মমতা।
কিন্তু রাজ্যগুলিকে জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ দিতে কেন্দ্র যে কার্যত অপারগ, তা স্পষ্ট হয়ে যায় ২৭ অগাস্ট জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকেই। কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষে জিএসটি বাবদ রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণের অঙ্ক দাঁড়াবে ৩ লক্ষ কোটি টাকা। তার মধ্যে সেস থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যেতে পারে।
বাকি থাকে পরিমাণ ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
এই ক্ষতিপূরণ পুষিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে দুটি বিকল্প দেওয়া হয়েছে, প্রথমত, রাজ্যগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ৯৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে পারে। ওই ঋণের সুদ ও আসল দুটোই শোধ হবে জিএসটি সেস তহবিল থেকে।দ্বিতীয়ত, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় রাজ্যগুলি পুরো ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকাই বাজার থেকে ধার করতে পারে।
কেন্দ্রের এই বিকল্প প্রস্তাব মানতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এদিন প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, জিএসটি নিয়ে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমি গভীরভাবে ব্যথিত। এটি ভারত সরকারের নৈতিক প্রতিশ্রুতিভঙ্গের সামিল। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোরও পরিপন্থী।
মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ২০১৩ সালে অরুণ জেটলি বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেবে না, এই আশঙ্কায় জিএসটি রূপায়ণের বিরোধিতা করছি। বর্তমান সরকার যখন নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে পারছে না, তাহলে তো আমরাও বিজেপি সরকারের ওপর আস্থা হারাচ্ছি।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ...কেন্দ্রের উচিত টাকা ধার করে রাজ্যগুলিকে দেওয়া। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার ঋণ নিলে কম সুদ দিতে হয়। রাজ্যগুলিকে কোটি-কোটি টাকা ধার করতে হলে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।
যদিও রাজ্য সরকারের এই অভিযোগ রাজনীতি ছাড়াই আর কিছুই নয় বলে কটাক্ষ বিজেপির।
জিএসটির ক্ষতিপূরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই মোদিকে চিঠি দিয়েচেন দিল্লি, তেলেঙ্গানা ও ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীরাও।