বীরভূম: নিজের গড়েই প্রশ্নের সম্মুখীন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। কেষ্টার একেবারে চোখে চোখ রেখে কথা ব্লক সভাপতির! কথা শেষ হতে না হতেই প্রকাশ্যেই সরিয়ে দেওয়ার নিদান অনুব্রতর। অঞ্চলের নেতার এমনই দমক, মিনিটের মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হলেন স্বয়ং অনুব্রত মণ্ডল।
এদিন রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে সরাসরি প্রশ্ন করেন গণেশ রায় নামের ওই বুথ সভাপতি। তিনি অভিযোগ করেন, ‘রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। জল জমে রয়েছে। এলাকার মানুষ টিপ্পনি কেটে বলছেন, রাস্তায় কি মাছ চাষ হবে।’ প্রশ্ন শুনেই ৩৪ বছরের বাম আমলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন অনুব্রত। ৩৪ বছরে কিছুই হয়নি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেই সব হয়েছে বলে দাবি করেন অনুব্রত। একই সঙ্গে গণেশ রায়কে তিনি প্রশ্ন করেন, রাস্তার অবস্থা কি বামফ্রন্ট আমলে ভাল ছিল? গণেশ রায় জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, বামফ্রন্ট আমলে রাস্তা ভাল ছিল, এখনই খারাপ অবস্থা।’ এরপরই ওই নেতার ওপর খড়্গহস্ত হন অনুব্রত। মঞ্চে থাকা জেলার নেতাদের বলেন, ‘এমন নেতার দরকার নেই, ওকে এখনই সরিয়ে দে।’
এ কথা শোনার পরই সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান গণেশ রায়। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দল করা নেতার এই ‘অপমান’ মানতে পারেননি তাঁর অনুরাগীরা। অনুব্রতর সভা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে শুরু করেন আরও অনেকে। চেয়ার একের পর খালি হতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে একেবারে মাঠে নেমে পড়েন বীরভূম জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ। তিনি গণেশ রায় ও এবং তাঁর অনুগামীদের ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এমনকি দাপুটে অনুব্রত মণ্ডলও শেষ পর্যন্ত নিজেরই দেওয়া নিদান ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হন।
বিগত এক দশকে এমন কোনও ঘটনা বীরভূমে অন্তত ঘটেছে বলে তৃণমূলীরাই মনে করতে পারছে না। যেখানে অনুব্রতর দাপটে বিরোধীরা নির্বাচনী মনোনয়ন পর্যন্ত জমা দিতে পারে না বলে অভিযোগ, সেখানে ব্লক সভাপতির দমকেই বেগ পেত হলে 'কেষ্টা'কে! বিস্ময়কর এই ঘটনাই এখন বীরভূম তো বটেই রাজ্য রাজনীতিতেও চর্চার বিষয়।