কলকাতা: কাল রাতেই চলে গিয়েছে শেষ লোকাল। অন্যদিনের তুলনায় আজ একেবারেই ফাঁকা শিয়ালদা স্টেশন চত্বর। শুনসান হাওড়া স্টেশনও। 


৬ মাস পর আবার আজ থেকে বন্ধ শহরতলির লাইফ লাইন লোকাল ট্রেন। দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও বেলাগাম করোনা সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে দু’সপ্তাহের জন্য লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।


শিয়ালদা স্টেশনে এখনও পর্যন্ত দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। অন্যদিকে, অফিস বা জরুরি জায়গায় পৌঁছতে অনেকেই কোনও স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন থামলে তাতে উঠে পড়ছেন। শিয়ালদায় থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ছবি চোখে পড়েনি।


প্রতিদিন অফিস টাইমে ভিড় থাকলেও, আজকের ছবিটা আলাদা হাওড়া স্টেশনে। শুধুমাত্র রেল কর্মীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন রয়েছে। হাওড়া স্টেশনের অধিকাংশ গেট বন্ধ। স্টেশন চত্বরে কড়া নিরাপত্তা। মাস্ক পরে, কোভিড বিধি মেনে স্টেশনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। 


শহরের মতো একই ছবি ধরা পড়ল জেলাতেও। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকলেও রেল কর্মীদের জন্য চালানো হচ্ছে স্পেশাল ট্রেন। সেই ট্রেনে সাধারণ মানুষ ওঠা বন্ধ করতে বিশেষ অভিযান চালাল রেল পুলিশ। মাইকে সতর্কতামূলক প্রচার চালানোর পাশাপাশি, যাত্রীদের স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। 


রাস্তায় সরকারি বাসের সংখ্যাও ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় চোখে পড়ে বাস ধরার দীর্ঘ লাইন। কোথাও আবার যাত্রীই নেই। 


যাদবপুর এইট বি বাস স্ট্যান্ডে সকালে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা। গড়িয়া ৬ নম্বর বাস স্ট্যান্ডে বাস থাকলেও যাত্রী নেই। 


কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা। ধর্মতলা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে রয়েছে একের পর এক বাস। যদিও রাস্তায় লোকজন কম। তাই বাসের সংখ্যা কম হলেও বসার জায়গা পেয়েছেন যাত্রীরা। 


অন্যদিকে, কামালগাজি মোড়ে বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন যাত্রীদের। ট্রেন না থাকায় বাসেও ভিড়। এই পরিস্থিতিতে বাসে দূরত্ব বিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না বলে বাস যাত্রীদের দাবি। 


একইভাবে, বারুইপুরের প্রায় প্রত্যেকটা বাস স্ট্যান্ডে লম্বা লাইন। ভিড়ে ঠাসা বাস। করোনা আবহে উধাও দূরত্ব বিধি।


কমিয়ে দেওয়া হয়েছে মেট্রোর সংখ্যা। অন্যদিন সকাল ৭টা ২০-তে দমদম স্টেশন থেকে ছাড়ে প্রথম মেট্রো। আজ প্রথম মেট্রো ছাড়ে সাড়ে ৭টায়। মিনিট দশেক দেরিতে ছাড়লেও ভিড় নেই।


স্টেশন চত্বর সকালে প্রায় জনশূন্য। লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে মেট্রো চলাচলে। মেট্রো স্টেশন তাই অনেকটাই ফাঁকা। 


শুধু ট্রেন বা সড়কপথ নয়, লোকাল বা বাস কম চলায় আজ তুলনায় অনেকটা ফাঁকা হাওড়া ফেরিঘাট। যাত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা।