কলকাতা : "মৌলবাদী শক্তিকে রুখে দিয়ে বাংলার মানুষ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন। তা সে যে নেতৃত্বের মাধ্যমেই হোক না কেন। সংযুক্ত মোর্চা মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেনি। গোল গোল কথা না বলে, এর বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান চাই।" বঙ্গে সংযুক্ত মোর্চার ভরাডুবি নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন সিপিআইএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
 
এদিন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা বলেন, '' সংযুক্ত মোর্চা ধর্মীয় ফ্যাসিবাদকে রুখতে পারবে মানুষের এই বিশ্বাস আমরা অর্জন করতে পারিনি। এই বিষয়টা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বসে অনুসন্ধান করবেন। সেই অনুসন্ধান যেন অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান হয়। গোল গোল কথা বললে হবে না। তবে আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলার মানুষকে, যার নেতৃত্বেই হোক না কেন তাঁরা মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে পেরেছেন। রাজ্যবাসী সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন।''


এই বলেই থেমে থাকেননি এই বাম নেতা। তাঁর দাবি, সংযুক্ত মোর্চা ৫০-৬০টি আসনে ভোট পেয়েছে বলেই বিজেপিকে রোখা গেছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু আমাদের জন্যই আসনগুলি বিজেপির দিকে যায়নি। উদাহরণস্বরূপ রায়দিঘির কথা বলেন কান্তিবাবু। তিনি বলেন, ''রায়দিঘিতে আমরা ও বিজেপি যে ভোট পেয়েছি তা যুক্ত হলে তৃণমূল হেরে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই বামেদের ভোটটা বিজেপির দিকে গিয়েছে। তৃণমূলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তারা বিজেপিতে ভোট দিয়েছে। অত্যাচারিত মানুষের পাশে আমরা সেভাবে দাঁড়াতে পারিনি। তাই বামেদের কর্মীরা বিজেপিকে আশ্রয় হিসাবে নিয়েছেন।''


রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচনের ভোট শতাংশ বলছে, ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। যদিও এই ভোট বিজেপির স্থায়ী ভোট নয় বলে মনে করছেন বর্ষীয়ান বাম নেতা। তাঁর মতে, আগামী দিনে এই ভোট বিজেপির সঙ্গে থাকবে না। তবে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী শক্তির শিকড় বাংলার মাটিতে ঢুকে গেল। তাই দলমত নির্বিশেষে পঞ্চায়েত নির্বাচন, পুরসভা নির্বাচনে সব ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট বেঁধে মাঠে নামতে হবে।


এ প্রসঙ্গে বিহারের রাজনীতির উদাহরণ দেন কান্তিবাবু । তিনি বলেন, অনেক সময় প্রধান শত্রুর বিনাশ করতে সমঝোতা করতে হয়। যেরকম বিহারে আরজেডি দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও সিপিআইএম ও বাম দলগুলি তাদের সঙ্গে জোট করেছে। বিজেপিকে ঠেকাতে সেখানে এই জোট হয়েছে। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর নির্বাচনেরও দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন এই প্রবীণ বাম নেতা। তাঁর কথায়, স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে জড়িত ডি রাজা , কানিমোঝি 
দলে থাকা সত্বেও ডিএমকে-র সঙ্গে সমঝোতা করেছে বামেরা। কেবল বিজেপিকে রুখতেই নেওয়া হয়েছে এই কৌশল।