বীরভূম: রাজ্যের যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তাতে এখন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আবেদন জানাব। মন্তব্য কৈলাস বিজয়বর্গীয়র।


এদিন বিশ্বভারতীর উপাচার্যর সঙ্গে দেখা করেন কৈলাস। বিশ্বভারতীর শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠক নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যেই কৈলাসের শান্তিনিকেতন সফর।


সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় কৈলাস বলেন, "রাজ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পায়ের তলার জমি যে সরে যাচ্ছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন। আতঙ্কের জোরে ফের কুর্সি হাসিল করতে চাইছেন।"


তিনি আরও বলেন, "এই হিংসা ও আতঙ্কের রাজনীতি যাতে শেষ হয়, তার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানাব যাতে এখন থেকেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। আমরা আহ্বান করব, মানুষ যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন।"


বাংলার মানুষকে সন্ত্রন্ত করার চেষ্টা করছেন কৈলাস, প্রতিক্রিয়া মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহর। বীরভূমের এই নেতা বলেন, বাংলা অনেক শান্তিতে রয়েছে। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে যে অশান্তি হচ্ছে, তা কেন্দ্রের পরিসংখ্যানেই প্রমাণিত।


তাঁর দাবি, বিজেপি এখানে এসে অকারণে ভয় দেখানো, মানুষকে চাপা রাখার চেষ্টা করছে। বলেন, প্রতিবারই কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট করায়। এটা নতুন কিছু নয়।


চন্দ্রনাথের অভিযোগ, মানুষকে গিনিপিগ বানাতে চাইছে বিজেপি। বাইরে থেকে লোক এনে বারবার উস্কানি দিচ্ছে। মানুষ তার যোগ্য জবাব দেবে ভোটের সময়।


সুর চড়ান রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। বলেন, আমরা কোনও আতঙ্কের সৃষ্টি করছি না। "বর্গি-সাহেবরা" যেখান থেকে এসেছেন সেখানে আতঙ্ক থাকে। তিনি যোগ করেন, ওদের হাতে সরকার আছে, ক্ষমতা আছে, অপব্যবহার করছে। আমাদের কিছু আসে যায় না।


প্রসঙ্গত, গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরে বিজেপি বুথ সভাপতিকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রথমে মারধর পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।


তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিজেপির। যদিও তৃণমূলের দাবি, বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ওই ঘটনা। বিজেপি সূত্রে দাবি, বিজেপির বুথ সভাপতি সৈকত ভাওয়াল শনিবার সন্ধেয় আরও কয়েকজনের সঙ্গে হালিশহরের বারেন্দ্র গলিতে গৃহসম্পর্ক অভিযানে বেরিয়েছিলেন।
অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আচমকাই হামলা চালায়। প্রথমে মারধর করা হয় বিজেপির বুথ সভাপতিকে। তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ।


আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুথ সভাপতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিত্‍সকরা। প্রতিক্রিয়ায় সোশাল মিডিয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ লেখেন, হালিশহরে সৈকত ভাওয়ালের নৃশংস মৃত্যু সঙ্কেত দিচ্ছে, বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন কতটা রক্তাক্ত হতে চলেছে। বিজেপির দাবি, হামলায় আহত আরও কয়েকজন।


ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিজেপি। বীজপুরের তৃণমূল নেতা সুবোধ অধিকারীর নাম করে অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার পাল্টা দাবি, বিজেপির নিজেদের মধ্যে ঝামেলার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।


আহত ২ দলীয় কর্মীকে হাসপাতালে দেখতে যান বিজেপি নেতা ও বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। বলেন, এভাবে চললে বদলার রাজনীতি হতে পারে। ঘটনার পর থমথমে গোটা এলাকা। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।


গতকালই, বীরভূমের পাড়ুইয়ে পতাকা টাঙানোকে কেন্দ্র করে বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাঁচাতে যাওয়ায় আক্রান্ত হন ওই কর্মীর বাবাও।


এর আগে, গত সপ্তাহে বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে ছররাগুলিতে একজনের মৃত্যুও হয়। গেরুয়া শিবিবের দাবি, ছররাবিদ্ধ ৯ জন দলীয় কর্মী।