জলপাইগুড়ি: গতকাল ছিল কোর কমিটির বৈঠক। আজ, মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা। বেলা ১২টা নাগাদ এবিপিসি মাঠে সভা সেরে কোচবিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তৃণমূল নেত্রী।


সেখানেও বেশ কয়েকটি কর্মসূচি রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কোচবিহার বিমানবন্দরে দলীয় বৈঠক করবেন তিনি। এরপর বিবেকানন্দ স্ট্রিটে এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন। একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন কর্মসূচি রয়েছে তাঁর।


যাবেন শিবযজ্ঞ মন্দিরে। সেখানে পুজো দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। রাত কাটাবেন সার্কিট হাউসে। আগামীকাল রাসমেলা ময়দানে কর্মিসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


তবে তার আগে আজ জলপাইগুড়ির সভা থেকে তিনি কী বার্তা দেন, সেদিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।


কয়েকমাসের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে উত্তরবঙ্গ সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে জলপাইগুড়িতে পৌঁছন তৃণমূল নেত্রী।


গতকাল জলপাইগুড়িতে পা রেখেই দলীয় নেতা-বিধায়কদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, উত্তরবঙ্গ জয় করতে হবে। তার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপির মোকাবিলা করুন।


লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের স্কোর শূন্য। উত্তরবঙ্গকে নজরে রেখে লাগাতার জেপি নাড্ডার মতো শীর্ষ বিজেপি নেতা সেখানে যাচ্ছেন, কর্মসূচি করছেন। উত্তরকন্যা অভিযানও করেছে বিজেপি। সেই অভিযানে দলীয় কর্মীর মৃত্যুকে হাতিয়ার করে ঝাঁপিয়েও পড়েছে তারা।


গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল। একটি আসনেও জিততে পারেনি তারা। অন্যদিকে উত্থান হয়েছে বিজেপির।


২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে উত্তরবঙ্গের ৫৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ছিল ৩৭টিতে। মাত্র ১৩টিতে এগিয়ে ছিল তৃণমূল।


তবে তৃণমূলের দাবি, বিমল গুরুঙ এবং বিনয় তামাঙ, উভয়েই এখন তৃণমূলকে সমর্থন করায় এবার পাহাড় ও গোর্খা অধ্যুষিত সমতলের বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে তারা ভাল ফল করবে।


একইসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের আশা, লোকসভা ভোটে এনআরসি ও সিএএ ইস্যুতে উত্তরবঙ্গের আদিবাসী, রাজবংশী ও উদ্বাস্তু ভোটাররা বিজেপি সমর্থন করলেও, এবার আর তা হবে না!


এছাড়াও দুয়ারে সরকার কর্মসূচিকেও গেমচেঞ্জার হিসেবে মনে করছে শাসকদল। যদিও, এরইমধ্যে দলের অন্দরে বিদ্রোহের সুরও ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে। ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী! সম্প্রতি সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে ময়নাগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারীর গলায়!


এই পরিস্থিতিতে সোমবার জলপাইগুড়ি পৌঁছে জেলা কোর কমিটির বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে ছিলেন অনন্তদেব অধিকারীও।


বিজেপি অবশ্য তৃণমূল নেত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাদের দাবি, লোকসভার মতোই বিধানসভা ভোটেও তারা দুরন্ত ফল করবে।


এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোচবিহার সফরের আগেই শুভেন্দুর সমর্থনে একাধিক জায়গায় ব্যানার, ফ্লেক্স। আজ সকালে কোচবিহার শহরের সাগরদিঘি, কেশব রোড, বাস স্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মমতার ছবির পাশেই শুভেন্দুর ছবি সহ ব্যানার, ফ্লেক্স দেখা যায়।
কোথাও লেখা দাদার অনুগামী, আবার কোথাও বাংলার মুক্তি সূর্য।