কলকাতা: শিশুদের জ্বর-শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা মোকাবিলায় গাইডলাইন প্রকাশ করল রাজ্য। স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত এই গাইডলাইনে শিশুদের  জ্বর-শ্বাসকষ্ট তিনদিনের বেশি থাকলে হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশের নীচে নেমে গেলেও হাসপাতালে  ভর্তি করতে বলা হয়েছে।আক্রান্ত  শিশুদের আলাদা রেখে চিকিত্সার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  


গাইডলাইনে আরও বলা হয়েছে, অসুস্থ শিশুদের থেকে প্রবীণদের আলাদা রাখতে হবে। শিশুদের বাড়িতে রেখে চিকিত্সা করালে মাস্ক পরে থাকতে হবে।  অসুস্থ শিশুদের নিয়ে ভিড়ের মধ্যে না যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। 


জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ছোট্ট শরীরটা। সঙ্গে শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট। চনমনে শিশুর দল খেলাধুলো ছেড়ে, হাসপাতালের বেডে।এমনই ভয়ঙ্কর ফ্লু ফিভারে আক্রান্ত শৈশব। রাজ্যজুড়ে জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। চারদিকে আতঙ্ক-উদ্বেগ। হাসপাতালে উপচে পড়ছে ভিড়।


যেমন, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক বিভাগের ছবিটা। মোট বেড রয়েছে ১২০টি। সবকটিই এই মুহূর্তে ভর্তি। ফলে এক বেডে ২ জন শিশুকে রাখার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন ওয়ার্ড খোলার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। 


এরইমধ্যে শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাজ্যের ২১টি সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে নতুন করে, ৪৩৫টি PICU বা Pediatric intensive care unit খোলা হচ্ছে।কয়েকদিন আগেই, ২৪৪টি নতুন Pediatric intensive care unit খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর।অর্থাত্‍, সব মিলিয়ে, নতুন ৬৭৯টি পিকু চালু হচ্ছে।


এছাড়া SSKM হাসপাতালে ৮০টি ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ১০টি NICU বা Neonatal intensive care unit চালুর নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।হাসপাতালগুলিতে যত দ্রুত সম্ভব নতুন ইউনিট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন তৈরি হওয়া PICU ও NICU, হাসপাতালের পুরনো ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত করতে বলা হয়েছে।স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এও জানানো হয়েছে, এর জন্য কোনও নতুন ভবন বরাদ্দ করা যাবে না। হাসপাতালের পুরনো বিল্ডিংয়েই এই নতুন ইউনিটের ব্যবস্থা করতে হবে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, শিশুদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল গুলিতে রাখতে হবে নেগেটিভ প্রেসার ভেন্টিলেশন সিস্টেম।


সম্প্রতি প্রকাশিত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের একটি রিপোর্ট বলছে, অক্টোবরেই দেশে শিখর ছুঁতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। উৎসবের মরসুমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে করোনা। সেই কথা ভেবে, এবার রাজ্যের বেশ কয়েকটি হাসপাতালকে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলার কথা ভেবেছে স্বাস্থ্য দফতর।এতদিন, বিসি রায় শিশু হাসপাতাল, ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও নর্থ বেঙ্গল হাসপাতালে ছিল শিশুদের জন্য কোভিড চিকিৎসার পরিকাঠামো। এবার এই তালিকায় যুক্ত করা হচ্ছে, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও মালদা মেডিক্যাল কলেজকে।স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শিশুদের করোনা চিকিৎসায়, রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতালের ক্ষেত্রে মেন্টর হিসেবে কাজ করবে এই পাঁচ হাসপাতাল।