কৌশিক গাঁতাইত, গোপাল চট্টোপাধ্যায়,আসানসোল: চুরির অভিযোগে আটক অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু ঘিরে অগ্নিগর্ভ কুলটির বরাকর। পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর, পুলিশের গাড়িতে আগুন। পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের খণ্ডযুদ্ধ। সাসপেন্ড দুই পুলিশ অফিসার।


পুলিশ হেফাজতে এক তরুণের মৃত্যুর অভিযোগে, মঙ্গলবার  অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পশ্চিম বর্ধমানের বরাকর। ভাঙচুর চালানো হল পুলিশ ফাঁড়িতে।জ্বালিয়ে দেওয়াহল পুলিশের গাড়ি।উর্দিধারীদের দিকে মুড়ি মুড়কি মতো উড়ে এল ইট।পাল্টা ফাটানো হল কাঁদানে গ্যাসের শেল।


চুরির অভিযোগে সোমবার রাতে ২১ বছরের আরমান আনসারিকে বাড়ি থেকে তুলে আনে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে কুলটি থানায় গিয়ে তরুণের বাবা জানতে পারেন, তাঁর ছেলে মারা গেছেন। মৃতের বাবার দাবি,আমার ছেলে পাশের বাড়িতে শুয়েছিল। ওই সময় পুলিশ ও চার-পাঁচজনকে এসে দরজায় নক করে। দরজা খুলতেই ওকে নিয়ে যায়। সকালে বরাকর ফাঁড়িতে গেলে জিজ্ঞাসা করায় ওরা কোনও উত্তর দেয়নি। এর মধ্যে কুলটি থানা থেকে একজন আসে আমাকে বাইকে চাপিয়ে কুলটি থানায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারি ছেলে মারা গিয়েছে।  আমার ছেলে কোনও অসামাজিক কাজে থাকে না।


পুলিশ সূত্রে খবর, আটকের পর গভীর রাতে আরমান আনসারিকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।


পুলিশের মারে তরুণের মৃত্যুর অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই সকালে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। প্রথমে বরাকর স্টেশন রোড অবরোধ করা হয়।এরপর বরাকর ফাঁড়িতে চড়াও হয় কয়েকশো মানুষ। শুরু হয় ব্যাপক ভাঙচুর। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের একটি গাড়িতে। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের আরেকটি গাড়ি।ভাঙচুর করা হয় ফাঁড়ি চত্বরে লাগানো সিসি ক্যামেরা।


পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স ও র‍্যাফ। তাদের লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি।বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।


পুলিশ হেফাজতে তরুণের মৃত্যুর অভিযোগে সঙ্গে সঙ্গেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। সাসপেন্ড করা হয়েছে বরাকর ফাঁড়ির আইসি এবং কুলটি থানার সাব ইনস্পেক্টরকে।প্রায় তিন ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।