হাওড়া:  লোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে এবার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের চেঙ্গাইল স্টেশনে অবরোধ। সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ নিত্য যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা রেল লাইন অবরোধ শুরু করেন। ঘটনাস্থলে আরপিএফ ও জিআরপি। জানা গিয়েছে , দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে  আটকে পড়েছে রেলের স্টাফ স্পেশালগুলি।


স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের দাবি, স্টাফ স্পেশ্যালের সংখ্যা খুবই কম। কাজেকর্মে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। খরচও হচ্ছে বিস্তর। তাই অবিলম্বে  লোকাল ট্রেন চালাতে হবে। আরপিএফ ও জিআরপি-র আধিকারিকরা অবরোধকারীদের বোঝানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। 


উল্লেখ্য, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে রাজ্যে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। 


গত বছর, ২৩ মার্চ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত, দীর্ঘ ৯ মাস বন্ধ ছিল ট্রেন পরিষেবা।সংক্রমণ কমার পর গত ১১ নভেম্বরে ফের ট্র্যাকে ফেরে লোকাল ট্রেন। কিন্তু, করোনার সেকেন্ড ওয়েভে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠায় ফের ৫ মে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব লোকাল।স্পেশ্যাল ট্রেনগুলি মূলত রেলের কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হলেও পরে স্বাস্থ্য কর্মী ও ব্যাঙ্ক কর্মীদের মতো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের যাতায়াতের সুবিধা দেওয়া হয়। গত বছর দেশব্যাপী লকডাউন চলার সময়ও বিভিন্ন স্টেশনে স্পেশ্যাল ট্রেনগুলিতে উঠতে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল।


কিছুদিন আগেই লোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে অবরোধ ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার মল্লিকপুর স্টেশন।চালু করতে হবে লোকাল ট্রেন।  এই দাবিতে কিছুদিন আগেই   রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন স্টেশন।করোনা আবহে, ভাইরাসের মতো এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভের আঁচ। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি।ইটের ঘায়ে রক্তাক্ত হয়েছিল খাকি উর্দি।লোকাল চালুর দাবিতে আগের দিনের পর ওই দিনও সোনারপুরে রেল অবরোধ হয়। আপ ক্যানিং স্টাফ স্পেশাল আটকে চলে বিক্ষোভ।তবে রেলপুলিশের আশ্বাসে এক ঘণ্টা পর উঠে যায় অবরোধ। এরপরই মল্লিকপুর, ঘুটিয়ারি শরিফ, বেতবেড়িয়া স্টেশনে অবরোধ শুরু হয়। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়, শিয়ালদা-বারুইপুর শাখার মল্লিকপুর স্টেশনে। ডাউন ও আপ, দুই লাইনে শুরু হয় অবরোধ। জিআরপি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতেই মারমুখি হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশকে দেখা মাত্রই তাদের ধাক্কা মারেন কয়েক জন।ভাঙচুর করা হয় সোনারপুর জিআরপি-র গাড়ি। পিছু হঠে পুলিশ। পরে আরও বাহিনী নিয়ে অবরোধকারীদের ওঠাতে গেলে, পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় পাথরবৃষ্টি।পালাতে গিয়ে পড়ে যান সোনারপুর আরপিএফের ওসি। পাথরের ঘায়ে মাথা ফেটে যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিরাপত্তারক্ষীর। মল্লিকপুর স্টেশনে যখন এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি, তখন রেল অবরোধ শুরু হয়ে যায় শিয়ালদা-ক্যানিং লাইনের বেতবেড়িয়া ও ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশনেও। বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছিল।