কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: কোথাও টিফিনের মেনু বদল। কোথাও আইসোলেশন রুমের ব্যবস্থা। কোথাও আবার দুটি শিফটে ক্লাস। বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের দিন ১১ মাস পর রাজ্যে খুলে গেল সরকারি, বেসরকারি স্কুল। কোভিড পর্বে আগের থেকে প্রতিটি স্কুলই বদলে গেছে অনেকটাই।


একদিকে করোনা-আবহ.... অন্যদিকে, রাস্তায় ধর্মঘটীদের চোখ রাঙানি। এই দুইয়ের মধ্যেই ১১ মাস পর স্কুল খুলল রাজ্যে। ধর্মঘটের দিনেও স্কুলে হাজির হল নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা। বেশিরভাগ স্কুলেই ১০০ শতাংশ হাজিরা। 


প্রায় এক বছর পর স্কুল খুললেও উধাও সেই চেনা ছবি। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে বদলে গিয়েছে সেই চেনা পরিবেশ।জারি হয়েছে একগুচ্ছ নির্দেশিকা। গড়িয়াহাটের বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনে দেখা গেল, টিফিনের মেনুও ঠিক করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়ার পাতে তাই শুকনো খাবার। 


বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনের এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘আগের টিফিনের সেই মজা নেই। কিন্তু খেতে তো হবে।’’


সরকারি বিধি মেনে স্কুলে সবসময় মুখে মাস্ক পড়ুয়াদের। স্যানিটাইজার সহ করোনা মোকাবিলায় যাবতীয় প্রস্তুতি প্রতিটি স্কুলে। হিন্দু স্কুলে কোভিড কিট দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্তের কথায়, ‘‘কোভিড কিট দেওয়া হয়। অভিভাবকদের সঙ্গে করোনা বিধি নিয়ে  আলোচনা করা হয়েছে।’’


কেষ্টপুরের দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরে আবার পড়ুয়াদের স্কুলে ঢুকতে হয় স্যানিটাইজ করার টানেলের মধ্যে দিয়ে। এরই মধ্যে কোনও স্কুলে দেখা গেল আইসোলেশন রুম। অধিকাংশ স্কুলেই প্রার্থনা হল ক্লাসের মধ্যে। সমবেতভাবে প্রার্থনা হলে গিয়ে নয়। এত সাবধানতার মধ্যেও স্কুলে ফিরতে পেরে খুশি পড়ুয়ারা।  বেসরকারি ফিউচচার ফাউন্ডেশন স্কুল থেকে শুরু করে সরকারি সংস্কৃত কলিজিয়েট স্কুল, দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরের, বেহালা গার্লস হাইস্কুলের মতো অনেক স্কুলেই পড়ুয়াদের শিফট ভাগ করা ক্লাস করানো হয়। জেলাতেও একই ছবি। রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুল, মালদা জেলা স্কুল, বাঁকুড়া জেলা স্কুল, হাওড়ার শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষালয়, পুরুলিয়া জেলা স্কুলে সর্বত্রই একই ছবি এদিন লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷


এত মাস পর এসে পড়ুয়ারা খুশিতে ডগমগ। ঘরবন্দি অনলাইন ব্যবস্থার বাইরে বেরোতে পেরে হাঁফ ছেড়েছে অনেকেই।  তবে নিউ নর্মালে শুক্রবার চেনা ঠিকানায় এসে অচেনা স্কুল দেখল পড়ুয়ারা। তারা বুঝতে পারল, চিরদিনের জন্যই হয়তো অনেক কিছু পাল্টে দিয়েছে করোনা।