কলকাতা: শীতলকুচি গুলিকাণ্ডের তদন্তকারী অফিসারকে তলব করল সিআইডি। আজই শীতলকুচিকাণ্ডের তদন্তকারী অফিসারকে ভবানী ভবনে তলব করা হয়েছে। মাথাভাঙা থানার আইসিকে-ও তলব করা হবে, খবর সিআইডি সূত্রে। ডিআইজি সিআইডি কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিট গঠন করা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘শীতলকুচিকাণ্ডে যথাযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শীতলকুচিকাণ্ডে মৃতদের পরিবারের একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেবে রাজ্য সরকার। শীতলকুচিকাণ্ডে সিআইডি তদন্ত করছে।’
গত ১০ এপ্রিল ভোটগ্রহণের দিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শীতলকুচি। মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে চারজনের মৃত্যু কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়। তৃণমূল ও বিজেপির তরজা তুঙ্গে ওঠে। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর এবার এই ঘটনার তদন্ত শুরু করল সিআইডি।
শীতলকুচির ঘটনার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতদের প্রত্যেকেরই শরীরের উপরের দিকে আঘাত ছিল। পিঠে বা বুকে আঘাত ছিল। কোমরের নীচে শুধুমাত্র আহত করার জন্য আঘাতের কোনও চেষ্টা এক্ষেত্রে দেখা যায়নি।
মৃত হামিদুল মিঞার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, পিছন থেকে গুলি চালানো হয়েছিল তাঁর দিকে। বুলেট ছুটে এসেছিল পিছন থেকে। এর থেকে অনুমান করা হচ্ছে, হামিদুল পালিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁকে পিছন থেকে গুলি করা হয়। মাঝারি রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছে বলে উল্লেখ ময়নাতদন্ত রিপোর্টে।
অপর এক মৃত ব্যক্তি নাম সামিউল মিঞার বুকে স্প্লিন্টারের ক্ষত, মাথায় ভারী ও ভোঁতা কিছুর আঘাত ছিল। এই আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে করা হচ্ছে, তাঁকে কোনওভাবে বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে। এছাড়াও তাঁর নাকে রক্তের দাগ ছিল।
অপর এক মৃত ব্যক্তির নাম মনিরুজ্জামান মিঞা। তাঁকেও মাঝারি রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছিল বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলা হয়েছে। তাঁর একটি পাঁজর ভেঙে যায়। গুলি চালানোর সময় তাঁর কোমরের নীচে বা দেহের অন্য কোথাও গুলি করা হয়নি।
অপর এক মৃত ব্যক্তির নাম নূর আলম মিঞা। তাঁর ক্ষেত্রেও মিডল রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয় বলে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই আঘাতের ধরন বলছে, আত্মরক্ষার স্বার্থে, নিজে বাঁচতে গিয়ে অন্যকে গুলি করার ধাঁচ এটা নয়। শুধু আঘাত করার জন্য গুলি করা হলে, কোমরের নীচে বা শরীরের অন্য কোথাও আঘাত থাকত। এক্ষেত্রে সবারই বুকে বা পিঠে গুলি করা হয়েছে।