দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের ছায়া সন্দেশখালিতে। মদ্যপানের প্রতিবাদে গণধর্ষণের শিকার বৃদ্ধা। পরে নৃশংস অত্যাচার। ২৫ দিন পর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু। একজন ধরা পড়লেও, অধরা বাকি অভিযুক্তরা।
বৃদ্ধার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থানার কাছে। থানার পাশে হোটেল চালাতেন বৃদ্ধা। সেখান থেকেই থানায় খাবার যেত। ৬ জুলাই রাত ন’টা নাগাদ হোটেল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন বৃদ্ধা। রাস্তায় ৪ জনকে মদ্যপান করতে দেখে প্রতিবাদ জানান।
এরপরই বাড়ি চলে যান তিনি। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আচমকাই ঢুকে পড়ে অভিযুক্তরা। ৬২ বছরের বৃদ্ধাকে গণধর্ষণ করা হয়। এমনকী, গণধর্ষণের পরেও মেলেনি রেহাই! নির্যাতনের পর চলে পৈশাচিক অত্যাচার। অভিযোগ, বৃদ্ধার যৌনাঙ্গে কাচের বোতল, লোহার রড ও গাছের গুঁড়ি ঢুকিয়ে চালানো হয় নারকীয় অত্যাচার।
পরিবারের দাবি, ঝোপের মধ্যে বৃদ্ধাকে ফেলে রেখে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। পরদিন সকালে অচেতন অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সন্দেশখালির খুলনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বৃদ্ধাকে। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এতদিন যমে-মানুষে টানাটানি চলছিল। সোমবার সকাল দশটা নাগাদ মৃত্যু হয় নির্যাতিতার।
৮ জুলাই অন্যতম অভিযুক্ত রাজ্যেশ্বর মাইতি ওরফে ভোলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি সন্দেশখালির ৭ নম্বর পাত্রপাড়ার বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন বৃদ্ধা।
পরিজনদের দাবি, তদন্ত নিয়ে প্রথম থেকেই উদাসীন পুলিশ। যদিও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পর ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতেই খুনের চেষ্টা, গুরুতর আঘাত-সহ একাধিক ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
পরিবারের অবশ্য দাবি, মৃত্যুর পরেও তাঁদের হয়রানি কমেনি। থানা থেকে প্রয়োজনীয় নথি না আসায়, সকাল দশটায় মৃত্যুর পরেও, এদিন ময়নাতদন্ত করা যায়নি!
এই ঘটনায় অনেকেরই স্মৃতিতে ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির গণধর্ষণকাণ্ডের স্মৃতিকে। গণধর্ষণের পর, প্যারামেডিক্যালের ওই ছাত্রীর ওপরেও নারকীয় অত্যাচার চালানো হয়।
এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। এবার সন্দেশখালি।