ভাঙড় (দক্ষিণ ২৪ পরগনা): মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাঙড়ে আন্দোলন ছিল পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প বন্ধের দাবিতে। বুধবার একধাপ এগিয়ে সেখান থেকে উঠতে শুরু করেছে জমি ফেরতের দাবিও।
রাতারাতি যেন পাল্টে গিয়েছে ভাঙড়। বুধবার সকালটা রোজকার মতো হয়নি। অন্য দিন যে সময় গ্রামের রাস্তায় লোকজন বেরিয়ে পড়েন, এদিন তখন রাস্তা কার্যত শুনশান। রণক্ষেত্র পরিস্থিতি দেখে অনেকেই মঙ্গলবার ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বুধবার ভোরে কেউ কেউ বাড়ি ফেরেন।
ভাঙড় যে এখনও ভিতরে ভিতরে ফুটছে, সেটা বোঝা গেল রাস্তায় ঘুরেই। এখনও পুলিশকে আটকাতে একশো মিটার অন্তর অন্তর গাছের গুঁড়ি ফেলে আটকানো রাস্তা। রাস্তায় গাড়িঘোড়া নেই। দোকানপাট বন্ধ। এখানে ওখানে ভস্মীভূত পুলিশের গাড়ির কঙ্কাল। মঙ্গলবারের লড়াইয়ের সাক্ষী হয়ে এখনও অনেক গাড়ি পড়ে রয়েছে পুকুরের জলে।
এদিন সকাল থেকে খামারআইট, পদ্মপুকুরের মতো গ্রাম ঘুরে কোনও পুলিশকর্মীর দেখা মেলেনি। প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে কাশীপুর থানার বাইরে প্রচুর পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে। কিন্তু, গ্রামের ভিতর শুনশান। ভোরের দিকে গ্রামে একটি জলকামান নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। গ্রামবাসীরা তাদের ঢুকতে দেয়নি। বেলা গড়াতে প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুরের পড়ুয়ারা ভাঙড়ে যান।
অন্যদিকে, ভাঙড়কাণ্ডে বহিরাগতদের দায়ী করে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার ভবানীভবনে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন তিনি। সেখানে ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার, রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি আইনশৃঙ্খলা এবং এডিজি সিআইডি।
সূত্রের দাবি, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভাঙড়বাসীর গায়ে যেন হাত না পড়ে। ভাঙড়ের মানুষের কোনও দোষ নেই। দোষ তাদের, যারা মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। ৪০-৫০ জন বহিরাগত এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সূত্রের দাবি, এরপরই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, এরা কোথায় থাকে, সেই ঠিকানা জোগাড় করুন। কড়া আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিন। যারা এখনও ভিতরে ঢুকে রয়েছে, তারা যেন বাইরে বেরোলেই গ্রেফতার হয়। নতুন করে কেউ যেন ভিতরে ঢুকতে না পারে।