বীরভূম: ভোটের আগে পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজ নিয়ে অপপ্রচার করা হয়েছে। এজন্য মাইকে প্রচার করে ক্ষমা চাইলেন বীরভূমের বিপ্রটিকুরির বিজেপি কর্মীরা। সেইসঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশও করেছেন তাঁরা।
বিজেপির বিপ্রটিকুরি বুথ কমিটির সহ সভাপতি বিপ্লব দাসকে এদিন দেখা যায় মাইক হাতে স্বীকারোক্তি করতে। প্রকাশ্যে নিজেদের কুকর্মের কথা স্বীকার করতে।
তাঁকে শোনা যায় বলতে, "২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বিপ্রটিকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে গ্রামে উত্তেজনা ও গন্ডগোলের সৃষ্টি করেছিলাম। যেগুলি ছিল ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আমরা সেই অপবাদ ও কুকর্মের জন্য বিপ্রটিকুরির গ্রামবাসীদের কাছে ক্ষমা চাইছি। এবং শপথ করছি, এরকম মিথ্যা অপবাদ ভবিষ্যতে করব না। গ্রামবাসীদের কাছে ভুল স্বীকার করে তৃণমূল নেতৃত্ব ও বিধায়কের কাছে আবেদন রাখছি।"
আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বীরভূমের লাভপুর বিধানসভা এলাকার বিপ্রটিকুরিতে। এবারের হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচন পর্বে, প্রচারে অন্যতম মূল ইস্যু ছিল উন্নয়ন।
প্রতিটি জনসভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গেরুয়া শিবির দাবি করেছিল, প্রকৃত উন্নয়ন থেকে রাজ্য বহুদূরে। তবে ভোটের ফলপ্রকাশের মাসখানেক পর এনিয়ে বিজেপির অন্দরেই শোনা গেল ভিন্ন সুর।
মঙ্গলবার বিপ্রটিকুরিতে টোটোয় মাইক বেঁধে রীতিমতো হেঁকে-ডেকে নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করেন বুথ কমিটির সহ সভাপতি।
শুধু ক্ষমা চাওয়াই নয়, সেইসঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশও করা হয়েছে। তাঁকে বলতে শোনা যায়,আমরা যাতে মা-মাটি-মানুষের সরকারের উন্নয়নে সামিল হতে পারি। এবং তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে পারি।
বিষয়টি সামনে আসতেই কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। আর তা ঢাকতেই তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছে তারা। জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, শুনেছি, তদন্ত করব, আলোচনা হবে, লাভপুর-নানুরে গণতন্ত্র-বাকস্বাধীনতা নেই, সামাজিক বয়কটের পরিস্থিতি, প্রাণ ও জীবিকা বাঁচানোর তাগিদে তৃণমূলের হয়ে কথা বলতে বাধ্য হচ্ছে।
ভয় দেখানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন, তৃণমূলের চাপ নেই, ওরা আমাদের দলে আসার জন্য আবেদন, আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। তিনি যোগ করেন, ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে বিজেপির ওই নেতা তৃণমূলে যোগ দিতে চাইছেন। বিষয়টি দলের উচ্চস্তরে জানানো হবে।
এবারের ভোটে বীরভূমে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছে তৃণমূল। ১১টি আসনের মধ্যে ১০টি গিয়েছে শাসক দলের পকেটে। লাভপুরেও ফুটেছে ঘাসফুল। এই অবস্থায় লাভপুরের বিজেপি কর্মীদের একাংশের স্বীকারোক্তি নতুন বিতর্কের জন্ম দিল।