কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পর এবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ১১ জুলাই কি রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হবে? সরকারের সঙ্গে কথা বলে এই সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত বলে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড সূত্রে খবর। নজর রাখা হচ্ছে একাধিক সর্বভারতীয় প্রবেশিকার দিকেও।
চলতি বছর প্রায় ১ লক্ষ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসবেন। ফি বছর মোট পরীক্ষার্থীর ৪০ শতাংশ পড়ুয়াই ভিন রাজ্যের। সূচি অনুযায়ী ঠিক ছিল জুলাই মাসেই হবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু সেই পরীক্ষা বাতিল হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি ওই সময়ে কীভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে চলতি সপ্তাহে নেওয়া হতে পারে সিদ্ধান্ত। খবর জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড সূত্রে।
করোনা আবহে ট্রেন বন্ধ। জুলাই পরিস্থিতি কেমন থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এদিকে শুধু এরাজ্যেৎ নয়, ভিন রাজ্য থেকেও আসবেন পরীক্ষার্থীরা। সেক্ষেত্রে কীভাবে সবটা সামাল দেওয়া যায় তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের ভাবনা বোর্ডের। যদি ১১ জুলাই এই পরীক্ষা না নেওয়া যায় সেক্ষেত্রে বাতিল করা সম্ভব না। পিছিয়ে দিতে হবে পরীক্ষা। কারণ এটা প্রবেশিকা। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি থেকে প্রফেশনাল কোর্সে ভর্তির পরীক্ষা জয়েন্ট এন্ট্রান্স। সর্বভারতীয় স্তরে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি সহ যে নিয়ামক সংস্থা আছে তারা পরীক্ষা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেদিকেও নজর দেওয়া হতে পারে বলে বোর্ড সূত্রে খবর।
এ প্রসঙ্গে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত বলেন, “যখনই হোক না কেন পরীক্ষা যেভাবে নেওয়া হয়, সেভাবেই নিতে হবে। অন্য যে কোনও ধরনের পদ্ধতিতে পরীক্ষার কথা যদি ওঠে যেমন অনলাইনে বা ওপেন বুক পদ্ধতিতে। এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কিন্তু কোনও পড়ুয়ার মেধাকে যাচাই করা সম্ভব নয়। অবশ্যই দেখতে হবে সর্বভারতীয় স্তরে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষা করার প্রয়োজন হলে তাই করতে হবে।“ সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা অন্য রাজ্যে কীভাবে পরীক্ষা হচ্ছে তা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন মৌলানা আবুল কালাম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্রের।
গতকালই মুখ্যমন্ত্রী জানান এবছর হচ্ছে না মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার ভবিষ্যত নির্ধারণে গঠিত দুই বিশেষজ্ঞ কমিটি এই মুহুর্তে পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষেই সরকারকে রিপোর্ট দেয়। তারপরও সরকার পরীক্ষা নিয়ে আম-জনতার মতামত জানতে চায়। মানুষের মতামতের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুল্যায়ন পদ্ধতি জানানোর জন্য, ৭ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মাধ্যমিকের বিপক্ষে এসেছে, ৭৯ শতাংশ। ৩৪ হাজার ইমেল পেয়েছি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বিপক্ষে ৮৩ শতাংশ। এটা মানুষের মত। এক্সপার্ট কমিটিও মত দিয়েছে। এই সব মত দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মত আছে, এক্সপার্ট কমিটিও বলেছে কোভিডের মধ্যে পরীক্ষা না নিতে। অনেক স্কুলেই সেফ হোম চলছে। আমরা তাই মাধ্যমিক-উচ্চমাধমিক নিচ্ছি না।