গোপাল চট্টোপাধ্যায়, সিউড়ি: বীরভূমের সিউড়িতে রোমহর্ষক ঘটনা। আজ সকালে একটি স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থায় ডাকাতির  চেষ্টা চালায় ৬ দুষ্কৃতী। শাটারের অ্যালার্ম বেজে ওঠায় আশপাশের লোকজন চলে আসেন। এরপর রাস্তা দিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালায় দুষ্কৃতীরা। তাদের ছোড়া গুলিতে আহত হন এক টোটোচালক। এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা।


ঠিক ক্রাইম থ্রিলার সিনেমার মতো! রাস্তা দিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে ছুটছে ৪ দুষ্কৃতী। পিছনে চিত্‍কার করতে করতে তাড়া করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার সাতসকালে আতঙ্কের এই দৃশ্যই দেখলেন সিউড়িবাসী। তবে সিনেমায় নয়, বাস্তবে। এদিন সকালে বীরভূমের সিউড়ির মসজিদ মোড় এলাকায় এক বেসরকারি স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থার অফিসে হানা দেয় ৬ দুষ্কৃতী। অফিসের উল্টোদিকে ১০০ মিটারের মধ্যে সিউড়ি থানা। ২০০ মিটারের মধ্যে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের দফতর।


পুলিশ সূত্রে দাবি, এদিন সকাল ৮টা ৫-এ অফিস খোলার সময় দুষ্কৃতীরা আচমকা দোতলায় উঠে এসে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও নিরস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীদের মাথায় পিস্তল ধরে দ্রুত শাটার খুলতে বলে। শাটারের সঙ্গে অ্যালার্মের সংযোগ ছিল। এক নিরাপত্তারক্ষী বুদ্ধি করে এমনভাবে শাটার খোলেন যাতে অ্যালার্ম বেজে ওঠে।


নিরাপত্তারক্ষীদের দাবি, অ্যালার্ম বেজে উঠতেই এক দুষ্কৃতী বলে, ‘আজ হল না, চল পালাই।’ ওই স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী মিঠুন মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘ওরা এক রক্ষীর কলার ধরে টানতে টানতে ওপরে উঠছিল। আমরা ভাবি, ওই রক্ষীর সঙ্গে কারও গন্ডগোল হয়েছে। তারপর ওপরে উঠে এসে আমাদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে শাটার খুলতে বলে।’


ব্রাঞ্চ ম্যানেজার দেবাশিস দাস জানিয়েছেন, ‘ব্রাঞ্চ খুলতে এসেছিলাম। তারপরই এই ঘটনা। আমরা ভীত হয়ে পড়েছি। নিরাপত্তারক্ষীর বুদ্ধির জন্য কোনওরকমে রক্ষা পেলাম।’



স্থানীয় সূত্রে দাবি, রাস্তায় এসে দুষ্কৃতীদের দু’জন মোটরবাইক নিয়ে চম্পট দেয়। বাকি দুষ্কৃতীরা রাস্তা দিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে দৌড়োতে শুরু করে। পিছনে স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়া করেন। অভিযোগ, এই সময় কোনও পুলিশের দেখা মেলেনি।  দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে আহন হন এক টোটো চালক।


স্থানীয় সূত্রে আরও দাবি করা হয়েছে, সিউড়ি আরটি গার্লস স্কুল মোড়ে পৌঁছে দুষ্কৃতীরা এক বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে ফেলে তাঁর বাইকে উঠে চম্পট দেয়। অভিযোগ, এই ঘটনা ঘটার বেশ কিছুক্ষণ পরে সিউড়ি থানায় পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। দুষ্কৃতীরা এখনও অধরা।