গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম : সোনার কয়েন বিক্রির প্রতারণার ফাঁদে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন একাধিক ব্যক্তি। একটা ফোন-কল আর তার মধ্যে ভেসে আসছে ভাঙা ভাঙা গলায় এক ব্যক্তির কিছু কথা। ফোনের ওপার থেকে বলা হচ্ছে, তাঁর কাছে বেশ কিছু সোনার কয়েন আছে, যেগুলো স্বল্পমূল্যে তিনি বিক্রি করে দিতে চান। অনেকেই লোভের বশবর্তী হয়ে সেই ফোন-কলের সাড়া দিচ্ছেন। তাঁদের নির্দিষ্ট করা জায়গায় নির্দিষ্ট দিনে হাজির হচ্ছেন। মোটা টাকা তাঁদের হাতে তুলে দিয়ে সেই সমস্ত নকল সোনার কয়েন আসল বলে নিয়ে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছে মানুষজন।


পুলিশ সূত্রে খবর, এই প্রতারণা চক্রের আঁতুড়ঘর সাঁইথিয়া থানার কল্যাণপুর গ্রাম। গত সাত দিনে এই ধরনের ফোন-কলের উপর ভিত্তি করে পুলিশ সেই সকল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। যাঁদের কাছে ফোন গিয়েছিল, তাঁদের নিয়ে সাদা পোশাকে ফাঁদ ফাঁদ পাতে পুলিশ। সেই ফাঁদে ধরা পড়ে যায় পাঁচজন ব্যক্তি। তিনজনকে সাঁইথিয়া থানা এলাকা থেকে ধরা হয়। বাকি দু’জনকে গ্রেফতার করা হয় শান্তিনিকেতন থেকে। ধৃতরা প্রত্যেকেই এখন পুলিশ হেফাজতে।


বীরভূমের বাইরে থেকে যে গাড়িগুলি আসছে, সাঁইথিয়া থানার পক্ষ থেকে রাস্তায় সেই গাড়িগুলিকে দাঁড় করিয়ে প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। আরোহীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে একটি করে লিফলেট। সেই লিফলেটে লেখা থাকছে, ‘এই এলাকায় নকল সোনার কয়েনের প্রতারণা থেকে সাবধান থাকুন। এলাকায় যদি কোনও ফোন যায় আপনার কাছে সোনার কয়েন বিক্রি সংক্রান্ত বিষয়ে, আপনারা সরাসরি থানায় যোগাযোগ করুন।’ সাধারণ মানুষ পুলিশের এই পদক্ষেপে খুবই খুশি।


এ বিষয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, ‘এরা বহু মানুষকে ফোন করে প্রতারিত করছে। আমরা সেই সমস্ত ফোন প্রাপকদের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মানুষ যাতে নতুন করে প্রতারিত না হয়, তার জন্য সচেতনতামূলক বিভিন্ন রকম প্রচার করা হচ্ছে। আরও কিছু মানুষ যাঁরা পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বাকি অপরাধীদের দ্রুত ধরে ফেলা হবে।’