ঋত্বিক মণ্ডল, কলকাতা: বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে, তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়েছেন মুকুল রায়। এখন বিধানসভা ভোটের আগে সেই মুকুল রায়ের শ্যালক বিজেপি ছেড়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে রাজ্যে। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি মুকুলের পরিবারেই এবার উলটপুরাণ। এবার পদ্মশিবির ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন সৃজন।


বছর দু’য়েক আগে অবশ্য, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েই জেলে গিয়েছিলেন মুকুল রায়ের শ্যালক সৃজন রায়। মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ২ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এই প্রতারণার মামলায় নাম রয়েছে মুকুল রায়েরও। ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল রায়। এরপরই ২০১৮ সালে এ রাজ্যের পুলিশ দিল্লি থেকে মুকুল রায়ের শ্যালক সৃজন রায়কে সেই প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার করে। প্রায় দশ মাস জেলে থাকার পর জামিন পান তিনি। ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন সৃজন রায়। কিন্তু, বিধানসভা ভোটের মুখে সেই তাঁকেই দলে নিল তৃণমূল।


তৃণমূলের সদস্য ও মুকুল রায়ের শ্যালক সৃজন রায় বলেন, ‘‘বিজেপি করা যাবে না... ধর্মের রাজনীতি ভারতে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না... মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ... তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম ৷’’ বিজেপি অবশ্য বিষয়টিতে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘ও তো মুকুল রায় নয় ৷’’


নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তৃণমূলনেত্রী বারবার বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন বলে কটাক্ষ করছেন। কিন্তু, বুধবার তৃণমূল যাঁকে দলে নিল, তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশই প্রতারণার অভিযোগে একসময় ধরেছিল! সেটা আবার মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরপরই! আর এই দলবদল নিয়েই তৃণমূল-বিজেপিকে একসারিতে ফেলে নিশানা করেছে সিপিএম-কংগ্রেস।


সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূল-বিজেপি দু’জনের কাছেই ওয়াশিং মেশিন ৷ কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর মতে, ‘‘পদ্মফুল ও তৃণমূল দু’টোই বিষ। দু’টোই ওয়াশিং পাউডারের কাজ করছে ৷’’


কে কতটা স্বচ্ছ আর দুর্নীতিপরায়ণ, তা নিয়েই এখন তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে যুদ্ধ। উল্টোদিকে ঘাসফুল ও পদ্মপফুলকে আক্রমণ করে বাম-কংগ্রেসের দাবি, চোরেরা জামা বদলাচ্ছে! তাই আসল পরিবর্তন কিছুই হচ্ছে না! শেষ অবধি ভোটাররা কার কথা শোনে, সেটা ভোটের ফলেই বোঝ যাবে।