কলকাতা: বিধানসভা ভোটের পর প্রথমবার রাজ্যে এলেন। বাংলা-বিজয়ের লক্ষ্যে দলের নেতা-কর্মীদের ভোকাল টনিকও দিলেন, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে তৃণমূল কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের পথে হাঁটলেনই না বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ! পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে টানলেন সেই বামেদের নাম। বললেন, রাজ্যে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করতে হবে। নিচুতলার কর্মীদের কাজ করা কতটা সমস্যার জানি। কারণ, ৩৪ বছরের বাম শাসনে, যে ধরনের অত্যাচার হয়েছে, দেখছি, সেটা তো এখনো চলছে।

সন্ত্রাস ইস্যুতে বামেদের আক্রমণের পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে কংগ্রেসকেও নিশানা করেন অমিত শাহ। তিনি বললেন, মোদীর সফর নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ তো মোদীর থেকে বেশি বিদেশে গিয়েছেন। কিন্তু মনমোহন কবে যেতেন, কেউ জানতে পারতেন না, তাই আলোচনা হত না। মোদিকে ঘিরে উন্মাদনা তৈরি হয়, তাই সবাই জানতে পারছেন।

সিপিএম-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে আক্রমণই করলেন না অমিত শাহ। অথচ, দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তৃণমূলনেত্রী কিন্তু সিপিএম-কংগ্রেসকে কার্যত উপেক্ষা করে বার বার বিজেপিকেই নিশানা করেছেন। কখনও একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে, কখনও আবার দিল্লিতে আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে। কলকাতা ফেরার পরেও তা তা অব্যাহত রাখেন। গত ১ আগস্ট মমতা বলেন, দিল্লির সরকার সারাক্ষণ ধর্মের নামে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। গোলমাল পাকাতে চায়।

এরপরেও কলকাতায় এসে তৃণমূলে নীরব বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির তরফে অমিত শাহকে টকিং পয়েন্টস হিসাবে সারদা থেকে নারদা নানা বিষয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, নিলেও, সেগুলো উচ্চারণও করলেন না মোদীর প্রধান সেনাপতি। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, রাজ্যসভায় জিএসটি বিল পাস করাতে যেহেতু মোদী সরকারের সংখ্যার প্রয়োজন, তাই কি তারা এখন তৃণমূলকে চটাতে চাইছে না? তাছাড়া, দেশজুড়ে পণ্য পরিষেবা বিল চালু করতে হলে অন্তত ১৫টি রাজ্যে তা চালু করতে হবে। এই সব কারণেই কি বাংলায় এসে তৃণমূলে নীরব মোদির সেনাপতি?