কলকাতা: তাঁর গাড়িতে এখনও লালবাতি। ব্যতিক্রম কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি। সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লালবাতি যে তিনি ছাড়বেন না,  তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

তাঁর এই দাবিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে তত্পর বিজেপি। আগামী রবিবার পুরভোটে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে বুধবার সকাল থেকে এলাকায় বাইক মিছিল করে প্রচার  করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বাইকের পিছনের সিটে লকেট চট্টোপাধ্যায়। কারও মাথাতেই ছিল না হেলমেট। ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সে প্রসঙ্গেই বরকতির গাড়ির লাল বাতিকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি। লকেট দাবি করেন, আগে বরকতির গাড়ির লাল লাইট খুলে দেওয়া হোক... আমরাও হেলমেট পরব। যদিও আরোহীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই হেলমেট পরে বাইক চালানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বরকতির গাড়ির লালবাতি নিয়ে অতীতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। ইমামের গাড়ি থেকে লালবাতি খুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তার পরেও সেই লালবাতি রয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা মন্ত্রী-আমলাদের গাড়িতে লালবাতি-নীলবাতির ব্যবহারে ১ মে থেকে  নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু এরপরও  সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লালবাতি ব্যবহার করে চলেছেন লালবাতি। এজন্য গতকাল তপসিয়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। গত মঙ্গলবার একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে লালবাতি ছাড়তে অস্বীকার করেন বরকতি। তাঁর যুক্তি, লালবাতি ব্যবহারের অনুমতি মঞ্জুর করেছিল ব্রিটিশ সরকার। তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, সেই অনুমতি তো ছিল পূর্বতন ব্রিটিশ সরকারের, বর্তমানের ভারত সরকারের নয়। জবাবে বরকতি বলেন, ভারত সরকারের প্রথমে নিজস্ব আইন করা উচিত। তারা তো কোনও আইন প্রণয়ন করেনি।

আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী,  বরকতির যুক্তি, ‘‘কেন্দ্রের আইন এখানে চলে না। রাজ্য সরকারের আইন চলে।’’ বরকতি বলেন, ‘‘আমি যে গাড়িতে লালবাতি লাগাই মুখ্যমন্ত্রী জানেন। এ নিয়ে তিনি কোনও আপত্তি করেননি।’’ তবে আদালতের নির্দেশে পরিবহণ দফতর লালবাতি প্রাপকদের যে তালিকা তৈরি করেছে, তাতে বরকতির নাম নেই। তা হলে? এ বার ইমাম সাহেবের যুক্তি— ‘‘বংশানুক্রমে আমরা গাড়িতে লালবাতি লাগাই। এটা আমাদের অধিকার!’’