জলপাইগুড়ি ও কলকাতা: জলপাইগুড়ি শিশুপাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীর মুখে এবার রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নাম। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাম জড়ানো হচ্ছে বলে পাল্টা দাবি বিজেপির।
জুহি চৌধুরীর পর এবার রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। একজন বিজেপি সাংসদ। অপরজন টিম অমিত শাহর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সাধারণ সম্পাদক এবং রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা! বিজেপির এহেন দুই হেভিওয়েট নেতার নাম উঠে এল জলপাইগুড়ি শিশুপাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীর মুখে। তাঁর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক জুহি চৌধুরী তাঁর সঙ্গে দিল্লি গিয়ে সম্ভবত এদের সঙ্গেই কথা বলতেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কারও কথা হয়নি। জুহি চৌধুরীর কথা হয়েছে। জুহি চৌধুরী হয়তো রূপা গাঙ্গুলি আর কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে কথা বলেছেন।
এই প্রেক্ষিতে নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেন শিশুপাচারে ধৃত হোম কর্ণধার চন্দনা। বলেন, আমি নির্দোষ। আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি পাশের ঘরে ছিলাম। আমি তো রাজনৈতিক লোক নই। এখানে আমার কোনও ভূমিকা নেই। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পাল্টা দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যন্ত্র হিসাবে সিআইডিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী তথা সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, চন্দনাকে দিয়ে এসব কথা বলানো হচ্ছে।



বিজেপির রাজ্য সভাপতির আরও দাবি, এই নামগুলি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দিলীপ ঘোষ বলেন, নামগুলো বলছে। জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূল আমার সঙ্গে একই কাজ করেছে খড়গপুরে। জড়ানোর চেষ্টা। আমি চ্যালেঞ্জ করায় পিছু হঠে। এখানেও সেই চেষ্টা হচ্ছে। পরিচয় থাকলে অনৈতিক নয়।
যদিও সিআইডি সূত্রে দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এক আপ্তসহায়ক নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রকে জুহি ও চন্দনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট করিয়ে দেন। যা দিলীপ ঘোষও অস্বীকার করতে পারেননি। এপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে প্রশান্ত সারিন বলে একজন অ্যাপয়েন্টমেন্ট করিয়ে দিয়েছে। হ্যাঁ করিয়ে দিয়েছে।
চন্দনাকে নিয়ে জুহি দিল্লি কেন যেতেন, সেই তথ্যও ইতিমধ্যে সিআইডি-র হাতে এসেছে। তদন্তে নেমে সিআইডি দাবি করে, হোমের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ ও অনুদান আদায়ের জন্য প্রায়শই হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তীকে নিয়ে দিল্লি যেতেন বিজেপি নেত্রী জুহি। একই সুর ধৃত চন্দনার গলাতেও। তিনি বলেন, জুহি চৌধুরীর কাছে আমরা অ্যাকচুয়ালি হেল্প চাইতে গিয়েছিলাম। স্পেশালাইজড অ্যাডপশন এজেন্সির ব্যাপারে হেল্প চাইতে গেছিলাম।
মূল অভিযুক্তের নামে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের নাম। আর বিজেপির মুখে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ব। সব মিলিয়ে শিশু পাচার চক্র ঘিরে এবার রাজ্য রাজনীতিতে আরও ঝড় ওঠার ইঙ্গিত।