কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ড থেকে নজর ঘোরাতেই রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, এর আগে সারদা মামলাতেও বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল নেতাদের বাঁচানো, ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া। ঘটনা হাতের বাইরে চলে গেলে মুখ্যমন্ত্রী নজর ঘোরানোর চেষ্টা করেন। ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডেও ব্যাটিং করতে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্যই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ তৃণমূল দলটা দুর্নীতির পাঁকে ডুবে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে রাজ্যও এর ফল ভুগছে। সেদিকে কোনও নজর নেই। 
দিলীপের অভিযোগ খারিজ করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, নজর ঘোরানোর কোনও প্রশ্নই নয়। টিকাকরণের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ অনেক রাজ্যর থেকেই এগিয়ে। দেবাঞ্জনের প্রতারনার ঘটনা একটা সামাজিক অপরাধ। এরসঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল সাংসদ ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এই ঘটনায় ভূক্তভোগীদের তালিকায় রয়েছেন। এই ঘটনা ধরা পড়ার পর পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তদন্ত চলছে। এই ঘটনা থেকে নজর ঘোরানোর কিছু নেই।অন্যদিকে, রাজ্যপাল  নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই কাজ করছেন। 
উল্লেখ্য, গতকালই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে নিশানা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, উনি দুর্নীতিগ্রস্ত। জৈন-হাওয়ালাকাণ্ডের চার্জশিটেও নাম ছিল জগদীপ ধনকড়ের। এভাবে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে দার্জিলিংয়ে জিটিএ-তে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিনি ক্যাগ দিয়ে অডিটের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী  রাজ্যপালকে পাল্টা আক্রমণ করেছিলেন।তিনি বলেছিলেন, জিটিএ নিয়ে তদন্তের আগে আগে রাজ্যপালের সফরের তদন্ত হওয়া উচিত। কাদের নিয়ে গেছে,কত টাকা খরচ হয়েছে, সব তদন্ত হওয়া উচিত। দার্জিলিঙের উপর এত রাগ কেন? যা ইচ্ছে তাই করবেন, মেনে নেব না। উত্তরবঙ্গকে অশান্ত করতে জেনেবুঝে দার্জিলিঙে গেছেন রাজ্যপাল। শুধু বিজেপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যপাল। উত্তরবঙ্গকে ভাগের চক্রান্ত চলছে, এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন রাজ্যপাল।’
এরপর গতকালই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে নাম থাকা সহ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেছিলেন, ‘সাংবাদিক বৈঠকে ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলছেন, জৈন হাওয়ালাকাণ্ডের চার্জশিটে রাজ্যপালের নাম আছে। কখনও ভাবিনি মমতার মতো নেত্রী উত্তেজনা তৈরি করতে এই অভিযোগ করবেন। এখনও পর্যন্ত জৈন হাওয়ালাকাণ্ডে কেউ দোষী প্রমাণিত হননি। জৈন হাওয়ালাকাণ্ডে চার্জশিটে কখনই রাজ্যপাল ছিলেন না। মুখ্যমন্ত্রী যা অভিযোগ করছেন, তার কোনও সত্যতা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর মতো একজন নেত্রীর এমন বক্তব্য আশা করিনি। অজিত পাঁজা হাওয়ালার চার্জশিটে ছিলেন, ছাড়াও পেয়েছিলেন। রাজ্যপাল কিন্তু চার্জশিটেই ছিলেন না। যশবন্ত সিন্হার নামও চাজশিটে ছিল, মুক্তও হয়েছিলেন। এ ব্যাপারে যশবন্ত সিন্হার মতো নেতার সঙ্গে আলোচনা করা উচিত মুখ্যমন্ত্রীর।’