সমিত সেনগুপ্ত, আমতা:  কথা ছিল যাবেন হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, হুগলির খানাকুলে।  কিন্তু জল বাড়তে থাকায়, আমতাতেই আটকে গেলেন মুখমন্ত্রী।  সেখানেই প্রায় হাঁটু সমান জলে দাঁড়িয়ে শুনলেন দুর্গতদের কথা। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিলেন প্রশাসনকে। 


মুখ্য়মন্ত্রী বললেন, আমি প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাইকে বলব, জল যেভাবে বাড়ছে একটু আগে থেকে লোককে উদ্ধার করতে হবে। জীবনটা কিন্তু আগে, মাথায় রাখবেন। আরেকটু দূর থেকে লোককে উদ্ধার করতে হবে। আর, এই জলটা যে বাড়ছে, বাড়তে বাড়তে রাত্রিবেলা হলে মাথা পর্যন্ত জল হয়ে গেলে মানুষ মরে যাবে, এই অবস্থা যেন না হয়।


বুধবার হেলিকপ্টারে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। ডুমুরজোলা স্টেডিয়াম থেকে রওনা হয়ে পৌঁছনোর কথা ছিল খানাকুলের ঘোষপুরে। খানাকুলের ঘোষপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়। কিন্তু সকাল থেকেই আবহাওয়া ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। 


এরপর ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে। তার ওপর রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল উপচে বানভাসি হয়ে পড়ে খানাকুল। হেলিপ্যাড জলে ডুবে যায়। এই পরিস্থিতিতে, সড়কপথে সেখানে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন থেকে সোজা হাওড়ার আমতায় গিয়ে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


আমতার সিয়াগড়ে হাঁটু জলে ঘুরে দেখেন পরিস্থিতি। কথা বলেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে।  মুখ্য়মন্ত্রী বললেন, আপনারা সকলে নিজেদেরকে বাঁচান। আর প্রশাসনকে বলব, কারও যেন কোনওরকম অসুবিধা না হয়। খবার, থাকার কোনও অসুবিধে যেন না হয়। আর বন্যা হয়ে যাওয়ার পর আপনারা জানেন, আমরা কীভাবে সাহায্য করি, আমরা নিশ্চই করব। করতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু, জল ক্রমশ বাড়তে থাকায়, আমতা থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে ফিরতে হয় নবান্নে।  


টানা বৃষ্টি ও নদীর জল উপচে বানভাসি হাওড়া-হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা। রূপনারায়ণের জল উপচে বানভাসি উদয়নারায়ণপুর, আমতা। বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি জলের তলায়।  আমতায় ৭টা গ্রাম পঞ্চায়েত পুরোপুরি জলের তলায়। 


প্রশাসন সূত্রে খবর, হাওড়া উদয়নারায়ণপুর ও আমতা মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার দুর্গতকে ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছ। হুগলির খানাকুলে ৮০টি অস্থায়ী ত্রাণশিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।