খানাকুল : বন্যার জলে কচুরিপানার সঙ্গে ভাসছে ত্রাণের বিস্কুট। বিজেপির পতাকা লাগানো নৌকায় পড়ে রয়েছে ত্রাণ সামগ্রীর বস্তা। মঙ্গলবার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন ও ত্রাণ বিলিকে ঘিরে এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল খানাকুলের হরিশচক। বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন এলাকার বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। বিধায়ককে আসতে দেখে মারমুখী হয়ে ওঠেন পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন। বিধায়কের দেহরক্ষীরা তাঁদের আটকে দেন। সেই সুযোগে গোলমালের ভিড় এড়িয়ে বেরিয়ে যান খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক।
বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, গ্রামের ভিতরে জলবন্দি পরিবারগুলির কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে লুঠপাট শুরু করে।
বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ বলেন, '' আমরা ত্রাণ দিতে যাচ্ছিলাম। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় যাতে ত্রাণ পৌঁছতে না পারি। সব লুঠপাট করে নেয়। মানুষের কাছে পৌঁছনো আটকাতেই এই হামলা।''
যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। তাদের পাল্টা অভিযোগ, বিধায়ক তহবিলের ত্রাণ বিজেপি কার্যালয়ে মজুত করতে গিয়ে জনরোষের শিকার হয়েছেন সুশান্ত ঘোষ।
তৃণমূল নেতা নূর নবি মণ্ডল বলেন, '' বিধায়ক তহবিলের টাকায় কেনা ত্রাণ সামগ্রী দুর্গতদের না দিয়ে বিজেপি কার্যালয়ে মজুত করেছিল। ওরা নিজেরাই নিজেদের লোককে দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। দেখাতে চাইছে মানুষের কাছে যেতে চাইছি কিন্তু কেউ যেতে দিচ্ছে না।''
খানাকুল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপি বিধায়ক।
যেদিকে চোখ যায়, সেদিকে শুধুই জল আর জল। চাষের জমি, রাস্তাঘাট, দোকানপাট থেকে বাড়ি ঘর, সবই জলমগ্ন। ৫ দিন ধরে অসহনীয় অবস্থা। বিদ্যুৎহীন এলাকা। পানীয় জলের আকাল। চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসী মানুষ। জলের তলায় হুগলির খানাকুলের প্রায় ৬৫টি গ্রাম। পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার বদলে, নতুন করে জল ঢুকেছে আরও বেশ কিছু গ্রামে।
আরামবাগ-গড়েরঘাট রাস্তার আরও বেশকিছু জায়গা জলের তলায় চলে যাওয়ায় খানাকুল যেতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আজ খানাকুলে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা থাকলেও, আবহাওয়ার এতটাই খারাপ হয়ে যায়, তিনি আর যেতে পারেননি। হাওড়ার আমতা থেকেই নবান্নে ফেরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।