কলকাতা: সিন্ডিকেটে রাশ টানতে আগেই কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। এবার প্রোমোটিং-দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার, বিধাননগরে, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে, বিভিন্ন পুর এলাকায় প্রোমোটিং-দৌরাত্ম্য নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরসভাগুলি যদি মনে করে, তারা শুধু প্রোমোটিং করবে, আর কিছু করবে না, তা চলবে না। সামগ্রিকভাবে এলাকার উন্নয়ন করতে হবে। কীভাবে উন্নয়নের কাজ করতে হয় তা কলকাতা পুরসভাকে দেখে শিখুন।
প্রশাসনিক বৈঠকের ফাঁকে, কাকলি ঘোষদস্তিদার, সব্যসাচি দত্ত এবং সুজিত বসুদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলার সময়, এ দিন ফের তাঁদের সতর্ক করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি মেটাতে হবে। এতে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে।
রাস্তা, জমি বেদখল হওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধেও এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে তিনি বলেন, রাস্তা, জমি জবরদখল কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না। রাস্তা দখল করে দোকান-বাজার বসিয়ে ফেলা কড়া হাতে বন্ধ করতে হবে। স্থানীয় কোনও নেতা বা পুলিশের কেউ যদে এরকম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাঁদের কাউকে রেয়াত করা হবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশের উদ্দেশে তাঁর দ্বিমুখী বার্তা। মানুষ যাতে পুলিশকে ভয় পায়, পুলিশকে সেই জায়গায় নিজেদের নিয়ে যেতে হবে। আবার এটাও দেখতে হবে হবে, পুলিশ যাতে মানুষের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একটা বিস্তীর্ণ অংশ বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনুপ্রবেশ থেকে চোরাচালানের যে কোনও অপরাধ কড়া হাতে রুখতে হবে। জেলায় অপরাধ কমাতে আরও বেশি করে সিসিটিভি বসানোরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এবারের বিধানসভা ভোটে, রাজ্যের বেশ কিছু পুর এলাকায় তৃণমূলের ফল সেভাবে ভাল হয়নি। সম্প্রতি, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ভবনে আলোচনা হয়। সেখানে, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব পরিষ্কার করে দেন, যে সব পুর এলাকায় ফল ভাল হয়নি, তার মূল কারণ, উন্নয়নের কাজে ঘাটতি। পুর এলাকায় প্রোমোটিং-দৌরাত্ম্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ দিন সে কথা বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীও। এমনটাই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।