দার্জিলিং: গতকাল পাহাড়ে দিনভর তাণ্ডব চালিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, মোর্চা পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র, বোমা মজুত করে রেখেছিল। ভানু ভবনের মধ্যে কেন এত অস্ত্র মজুত করে রাখা হবে? এভিডেন্স আছে। আড়াই ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব করেছে মোর্চা। মলোটোভ ককটেল ছুঁড়েছে। কিন্তু, প্রশ্ন হল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এই জঙ্গি আন্দোলনের পরিকল্পনা কেন আগে থেকে বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারল না দার্জিলিং জেলা পুলিশ? পাহাড়ে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী সহ গোটা মন্ত্রিসভা হাজির, সেখানে বৈঠক স্থলের অদূরে কী করে একের পর এক পুলিশের গাড়ি জ্বালানোর সাহস পেল মোর্চা সমর্থকরা? ভানুভবনের ভিতরে অস্ত্র মজুত করে রাখা হয়ে থাকলে, কেন সংঘর্ষের পর সেখান থেকে বিমল গুরুংকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল পুলিশ? কেন তখনই মোর্চা প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়নি?

প্রকাশ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও, সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার যেভাবে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়া মাত্র রাজভবনের অদূরে জিমখানা ক্লাবের কাছে, ভানু ভবনের কাছে এবং সেন্ট অ্যান্ড্রুজ গির্জার কাছে মোর্চা সমর্থকরা হামলা চালায়, তাতে পুলিশের ভূমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, যেভাবে মুহূর্তের মধ্যে একের পর এক পুলিশের গাড়ি জ্বালানো হয়েছে, কিয়স্ক পোড়ানো হয়েছে তা থেকে স্পষ্ট, আগাম পরিকল্পনা একটা ছিলই। কিন্তু, পুলিশ এর বিন্দুমাত্র আঁচ করতেই পারেনি! তাই মারমুখী মোর্চা সমর্থকদের প্রথম দফার ধাক্কা সামলাতে গিয়েই আহত হয় জনা দশেক পুলিশ কর্মী!

মোর্চার বিক্ষোভের সামনে মহিলা ও শিশুরা থাকায় পুলিশের কাজ আরও কঠিন হয়ে পড়ে। শেষপর্যন্ত সিআরপিএফের মহিলা জওয়ানদের সামনে রেখে এগোতে শুরু করে পুলিশ। তখনই মোর্চা সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সূত্রের খবর, মোর্চার মারমুখী সমর্থকদের মধ্যে গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেলের সদস্যরা ছিলেন। যাঁরা অতীতে পাহাড়ে মোর্চার জঙ্গি আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল।

এই প্রেক্ষাপটে পাহাড়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখার ভার তিন আইপিএসকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটিতে রয়েছেন জাভেদ শামিম, সিদ্ধিনাথ গুপ্ত ও অজয় নন্দ। এই তিন আইপিএস অফিসারেরই অতীতে পাহাড়ে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। পাশাপাশি মোর্চার বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল ভানুভক্ত ভবন দু মাসের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন।